না, ভুলিনি তোমাকে প্রীতিভাজনেষু,
ভুলিনি আমাদের সম্পর্কের সহজিয়া সততা,
জলপ্রপাতের দিকে তাকিয়ে আমি ভাবছিলাম
দোতারা বাজানো এক বাউলের কথকথা,
উপমাটি পছন্দ হয়নি তোমার,
বিকল্প প্রস্তাবে শরীরে ফুটিয়ে ছিলে নৃত্যের স্রোতজল নন্দিত ছল,
চপস্টিকের দ্যোতনায় ছড়ানো কিমচির মশলা মিশ্রিত গন্ধ,
সোপানের শেষ ধাপে পৌঁছে অনুভব করি
স্মৃতিই সবিশেষ সম্বল,
অসম্মতিতে অনেকবার আমাদের সংলাপও হয়েছে বন্ধ।
ছিলে গবেষণা-প্রবণ প্রিয় ছাত্রী,
মফস্বলের ছোট্ট ক্যাফেতে কল্লোলিত হয়েছে বিষয়টা
পরিচয় করিয়ে দিয়েছি—
সুকুমার শিশুসম্পদের সৃজনে যারা নিত্যদিন দেয় শ্রম,
হয়ে ওঠে ধাত্রী;
কিছু বিষয়ে মিলও ছিলো আমাদের
একত্রে বিরোধীতা করেছি যুদ্ধ,
শিখিয়েছো— জলে কীভাবে মেশাতে হয় কালি,
ভাবনা হয়েছে বিপ্রতীপ ফের,
অকারণে কখনো হয়েছো ক্রুদ্ধ।
মনে আছে— রেশমের কাগজে এঁকেছিলাম সরল এক চন্দ্রাবলী
সেজেছি তোমার ক্যালিওগ্রাফীর ছাত্র,
না, হেলা করোনি— ঠোঁটে তুলে দিয়েছো চন্দ্রমল্লিকা চা এর পাত্র।
কিন্তু ছাড়তে তো পারলে না কারাতির কোপে ইটভাঙ্গা যুবকের সম্মোহন,
বিক্রি করলে কন্ঠ কিছু দিন,
হতে চাইলে রকস্টার,
আমার আগ্রহ মিইয়ে আসলো—
নিজেকে মনে হলো সর্বস্ব হারানো এক মিসকিন,
বুঝলে—আমি আছি আগের মতোন মরমের মরিচিকায় মগ্ন— স্বপ্নপ্রবণ,
জনোই তো পৃথিবীর তাবৎ হ্রদ বিশুষ্ক হলেও ফণিমনশার
কন্টক কল্লোলিত হৃদয়ে থেকে যায় জলের সারোৎসার,
মেতেছো এখন গ্রাফিক ডিজাইনে—
ড্রাগসের দগ্ধতাও নাকি করেছো পরিহার;
এঁকেছো দারুণ দক্ষতায় জমে তুষার হওয়া আয়নাপ্রতিম হ্রদ—
বলি হে প্রীতিভাজনেষু.. তুমি চমৎকার
তুমুল সংযমে অসংখ্য অসূয়াও করেছো বদ;
স্ক্রিনে দেখছি—
ছোটাছুটি করছে নানাবিধ গ্রাফিক রেখায় সহস্র আরশোলা,
যদি ফিরে আসো একবার—
একত্রে ফের ক্যালিওগ্রাফ করতে পারি
আণবিক অস্ত্র মুক্ত হোক কোরিয়ান পেনিনসুলা।