কবিতা

সার্কাস

সার্কাস -১

আমাদের এলাকায় সার্কাস এসেছে ।
পরিচালক একজন তৃতীয় লিঙ্গের হওয়ায়
সার্কাস জমে উঠেছে বেশ।

সম্পর্কিত

পরিচালক ভালোবাসেন
অলম্ভুত পেটমোটা এক হস্তিনী,
নদীর গতিকে শাসন করেন যিনি।

সার্কাসে আছে কিছু অজগর আর
বিড়ালের বিশাল বহর
কেননা পরিচালক অজগর আর
বিড়াল পোষতে ভালোবাসেন।

একটি অজগরি নৃত্য পটিয়সী হওয়ায়
বিড়ালগুলো শান্ত থাকে।

অজগরির সাথে একটি বিড়ালকে
সঙ্গমরত অবস্থায় দেখা গেছে
সংবাদ পেয়ে গেটে প্রচুর লোক।

লিঙ্গ নিরপেক্ষ পরিচালক মুচকি হাসেন,
এইবার জমবে খেলা
এইবার জমবে সার্কাস ।

আমাদের এলাকায় সার্কাস এসেছে
আমরা দলবেঁধে সার্কাস দেখতে যাব।


সার্কাস -২

সবাই টিকেটের জন্য ব্যস্ত নদীর পাড়ে
টিনের বেড়ার পেন্ডেলের সামনে।

এক ঘন্টা পর শুরু হবে সার্কাস
বেড়ার পেছনে সারি সারি বাঁশ।


সার্কাস -৩

গারো পাহাড়ের লোকজন
হস্তিকে ডাকেন মামা।

মামা এসে নষ্ট করেন ফসলের মাঠ
আর এই সার্কাসে আছেন এক মামী
যিনি থার্ড জেন্ডারের চে‌য়ে দামী।

সার্কাস সার্কাস চলছে ঝাক্কাস,
আমাদের মগড়া পাড়ে সার্কাস।


সার্কাস – ৪

ভাটির রাজ্যে থার্ড জেন্ডারের সার্কাস
হেজা মারার দিনকাল নেই আজ।

তারও আগে উড়িয়ারা ঘুরতো বনে
ঘন গাছগাছালির ফাঁকে হেজার সন্ধানে।

আজকাল হেজা নেই উড়িয়া বেকার
চোখে তার তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার,
যেই খানে ফেলা হবে মুচারের চাকু
সেইখানে হবে পুনরায় ভাগ আবার।

ভাটির রাজ্যে মুচার এক জমিদার
তার উপরে ছাতা হাতে অজগর,
যার সাথে হস্তিনির অনন্ত সঙ্গম
তা দেখে মজা লুঠে হিজরা নাগর।

সার্কাস সার্কাস চলছে চলবে
শিয়াল পন্ডিতের বউ কথা বলবে,
টিনের চশমা চোখে সার্কাস দেখবে
চামারের বংশধর রাজত্ব করবে।

সার্কাস সার্কাস আমাদের বাড়ির পাশে
শিয়াল পন্ডিতের বউ হেজা রানী নাচে।

 

আপনার মতামত জানান

এনামূল হক পলাশ

কবি ও গীতিকার। জন্ম ১৯৭৭ সালের ২৬ জুন নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার বাদে চিরাম গ্রামে। উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর। ভূমি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। প্রকাশিত বই, ‘অস্তিত্বের জন্য যুদ্ধ চাই’, ‘জীবন এক মায়াবী ভ্রমণ’, ‘অন্ধ সময়ের ডানা’, ‘অন্তরাশ্রম’, ‘মেঘের সন্ন্যাস’, ‘পাপের শহরে’, ‘তামাশা বাতাসে পৃথিবী’, ‘জল ও হিজল’, ‘অখণ্ড জীবনের পাঠ’, ‘লাবণ্য দাশ এন্ড কোং’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button

দুঃখিত, কপি করা যাবে না।