আমার কোমল
তোমার দৃঢ়তা দেখে আজ আমি খুব বিস্মিত, বিমুগ্ধ ও চিন্তিত হয়ে পড়েছি। এতো বড় একটা accident করার পরও তোমার কথা রাখার জন্য ওখানে আসা ঠিক হয়নি। এমন একাকী। তুমি তো আসার পথে অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারতে। যেভাবে মাথার ব্যথায় কথা বলছিলে— খুব দুশ্চিন্তায় আছি— তোমাকে ঐভাবে মাঝপথে ছেড়ে আসতে ইচ্ছে করছিলো না। মাথায় আঘাত-পাওয়া খুব খারাপ- তৎক্ষণাৎ দুর্ঘটনা না ঘটলেও ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই খুব-ই খারাপ দিকে মোড় নিতে পারে- বিশেষ করে তিনটি লক্ষণ খারাপ: (১) মাথায় আঘাতের ফলে বমি হওয়া (২) শ্বাসকষ্ট (৩) চোখে আবছা দেখা। আজই ডা. বরেন চক্রবর্তীকে ডাকিয়ে এনে এ ব্যাপারে বিশদ আলাপ করলাম। মনটা খুব খারাপ হয়ে আছে। চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন আছি। রোববারে কাজকর্ম সেরে ১০টা নাগাদ চলে এসেছি বাসায়। উদ্বিগ্নতা কোনো ক্রমেই কমছে না। কাটছে না। অথচ এতো কাছাকাছি আছি। মাত্র ১০/১৫ মিনিটের পথ। তোমাকে একবার চোখের দেখা দেখে আসতে ইচ্ছে হচ্ছিলো। কিন্তু তুমি মানা করেছিলে; হয়তো ব্যাপারটিকে কেউই সহজভাবে নেবে না ভেবে নিজেকে শাসন করলাম। এতো অসহায় লাগছে যে নিজের উপরই রাগ হচ্ছে। আজকে বড় অপরাধী মনে হচ্ছে নিজেকে। অনেকদিন তো গেছে তোমার আসতে দেরি হয়েছে দেখে মনে-মনে আশঙ্কা করেছি accident করলো না কি। অথচ হলোও তাই। অপরাধী লাগছে এইজন্যে যে, “তবে কি মনে মনে অবচেতনে আমি তোমার অমঙ্গল চেয়েছি?” তা কি করে হয় বাবা-মা’রা তো ছেলে- মেয়েদের বেলাও এই ধরনের দুশ্চিন্তায় থাকে। আমি নিজে আমার বাচ্চাদের জন্য এইরকম দুশ্চিন্তা করি। ওরা বেশ দূরের রাস্তায় রিক্শা চেপে স্কুলে যায়- ভয় হয় এরকম। আমি, জানি ঐ অতো বড় আঘাত মাথায় নিয়েও তুমি কথা রাখার জন্য আমার কাছে আসো নি- ঐ মুহূর্তে আমার আদর তোমার দরকার ছিল- অথচ আমি তা করতে পারলাম না। তুমি দীর্ঘ বিশ্রাম নিতে বিছানায়, আমি তোমার মাথার কাছে বসে জেগে থাকতাম উদ্বিগ্নতা নিয়ে- এটাইতো হওয়া উচিত ছিলো। মনটা তেতো হয়ে আছে তোমাকে ছেড়ে আসা অব্দি। অস্ফুটে আধা-নাস্তিক এই আমি আল্লাহ্র কাছে দোয়া পর্যন্ত করেছি। আমার অজান্তেই ঘটে গ্যালো ব্যাপারটা। আল্লাহ্ তোমাকে ভালো রাখুন। কোমল, ঘুম আসছে না- ছটফট করছি শুধু। তুমি ঘুমোও কোমল, ভালো বিশ্রাম হোক তোমার। দ্রুত আরোগ্য লাভ করো। আমার মা প্রায়শই বলতেন, প্রিয়জনের মনে প্রথমেই খারাপ চিন্তাটারই উদয় হয়, সন্তানের অমঙ্গল আশঙ্কায় বাবা-মা’র মন ভয়ার্ত থাকে।
কোমল, আজকে কোনো কাজই আমার দ্বারা আর সম্ভব নয়। অন্যদিন তবু পড়াশোনা করি, নোট নিই। দু/চার পঙক্তি লিখিও। আজ আর কোনো ব্যাপারেই মন সন্নিবেশ করতে পারছি না। তুমি বারবার ফ্যানের বাতাসের কথা বলছিলে, তোমার কি শ্বাসকষ্ট হচ্ছিলো। জিজ্ঞেস করা হয়নি। অবশ্যি শ্বাসকষ্ট ও চোখে ঝাপসা দেখা ব্যাপারটা জানলাম বরেনের কাছে সন্ধ্যায় মাত্র। বমির ব্যাপারাও জানতাম বলে তোমাকে বারবার বলছিলাম ঐটি সম্পর্কে। আমার ভালো লাগছে না। বাকী রাত নারকীয় যাতনায় কাটবে। এমনিতেও (তোমাকে নিয়ে) খুব যে একটা নিশ্চিন্তে থাকি, তাও নয়। তোমার সম্পর্কে নানা চিন্তা নানা ভাবনা আমাকে পেড়ে ফ্যালে। তোমার ভবিষ্যৎ, তোমার অমূল্য জীবনের কথা ভেবে কূল পাই না। স্বস্তি পাই না। তোমার বেদনার, দুঃখের রোধের ব্যাপারে আমি অনবহিত নই। অন্তত বুঝতে চেষ্টা করি। তোমার সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল আমার বেঁচে থাকার জন্যেও দরকার। দুঃখ হয় এই ভেবে যে, এমন একা নিষ্পাপ, পবিত্র আত্মাকে আমি গভীর কষ্টের মধ্যে টেনে নামিয়েছি স্বার্থপরের মতো। নিজের বঞ্চিত জীবনকে কিছুটা অর্থবান করার লোভে তোমাকে এতো গভীর কষ্টের জলে নামানো ঠিক হয়নি, ঠিক হয়নি, ঠিক হয়নি। পাপ হয়েছে। এই পাপের থেকে কোনো পরিত্রাণ নেই। অথচ আমি নিজেও আরো অসুখী, দুঃখময়, কষ্টকর জীবনযাপন করছি। আগে তো তবু এক ধরনের সান্ত্বনা ছিলো। এখন সেটিও অবসিত। ক্রমশই হতাশার পঙ্কে ডুবে যাচ্ছি, পরিত্রাণহীন। যাক্ এসব কথা। তোমার এই দুঃসময়ে দুঃখের পাঁচালী গাওয়া ঠিক হচ্ছে না। তুমি দ্রুত সেরে ওঠো। তুমি সেরে উঠলে অনেক কথা হবে। দুজনে পরস্পরকে আরো কাছে পাবো ভবিষ্যতে সেই আশায় চিঠি শেষ করছি। আমার অনেক অনেক ‘—’ নিও।
তোমারই জীবন ১/৪/৮২
রাত
কোমল, তোমার চিঠি পেয়ে মনটা খারাপ হয়ে গ্যালো। এরকম দু/একবার আমার নিজেরও হয়েছে। সবকিছু তখন অর্থহীন মনে হয়। শারীরিক অবসাদও প্রচন্ড আকার ধারণ করে তখন। স্থবিরতা বেড়ে যায়। তোমার ঈধংবটি হয়তো আলাদা। আর তাছাড়া, তোমার ঐ বোধের অংশীদারও যখন অন্য কেউ হতে পারবে না বলে জানিয়েছো। তখন এ নিয়ে আর কী বলবো, বলো।
আমারও মন নানা কারণেই আজকাল খারাপ থাকে। পানাহারও তো ছেড়ে দিতে হলো। অনেক সময় খুব অসহ্য লাগে। কিন্তু তোমাকে অমান্য করতে পারি না। আজকেই দুপুরে যাওয়ার জন্য সিরাজী পীড়াপীড়ি করছিলো। ওকে ‘না’ করে দিলাম। মন খারাপ করে চলে গ্যালো সে। ও চলে যাওয়ার পরই তোমাকে টেলিফোন করেছিলাম। আমাদের উভয়ের জীবনে এমন এলোমেলো হাওয়া বইলে চলবে কেন। জীবনটাকে স্বাভাবিকতার মধ্যে এনে ফেলো, মনকে নিজের বশবর্তী করো। দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছেড়ে ফেলে যা উবপরংরড়হ নেয়ার নিয়ে ফেলো। আজ বড় করে লিখলাম না। কাল বড় করে লিখবো।
তোমারই ‘জীবন’ ১/৪/৮২
কোমল
শুক্রবার (২.৪.৮২) অফিস ছিলো বারোটা পর্যন্ত। অফিসে সিটে বসে উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করেছি তোমার টেলিফোনের অথবা খবরের পাইনি। সন্ধ্যায় হলে টেলিফোন করেছিলাম। রওশন আরা বলে এক ভদ্রমহিলা ধরেছিলেন টেলিফোন, তারা তোমার অসুস্থতার খবর জানেন। কিন্তু আর কিছুই জানেন না। এমনকি বাসার ঠিকানাও। আমি পরিচয় গোন করে তোমার অপপরফবহঃ-এর কথা জানালাম, বাসার ঠিকানাও তোমার বাসায় খোঁজ নেয়ার জন্য মনটা ছটফট করছিলো। কিন্তু তোমার নিষেধের কথাও মনে পড়ায় আত্মসংবরণ করলাম। রাতটা খুব দুশ্চিন্তায় কাটিয়েছি। সকালে যথারতি অফিসে গিয়ে অপেক্ষায় থেকেছি খবরের। না পেয়ে ভাবলাম বিকেলে একবার খোঁজ নিই। কিন্তু সংকোচে তা পারলাম না। কি জবাব দেবো কি বলবো যদি কেউ জিজ্ঞাসা করে। অতএব যাওয়া হলো না। সন্ধ্যায় হলে টেলিফোন করেছিলাম। একই জবাব, “ও তো হলে আসেনি।” বুঝতে বাকি রইলো না তুমি গুরুতরভাবে অসুস্থ, কিন্তু এই রাতের বেলা যাওয়া কি ঠিক হবে। এই দ্বিধাদ্বন্দ্বে পরে রাত ন’টা বেজে গ্যালো। বাসায় খোঁজ নেয়া আর হলো না। সংকোচ ভয় সবকিছুই তোমার দুলাভাইকে নিয়ে। পাছে ভদ্রলোক আমাকে কোনো বাঁকা কথা বলেন, কিংবা তোমাকে পরে ঐ প্রসঙ্গ তুলে অপমান করেন। আমি কিছু বুঝতে পারছি না। কোমল, আমার কী করা উচিত। বিবেক, মন বলছে, “যাও, খোঁজ নাও।” অথচ… আর এ ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা না করে কাল সকালে চলে যাবো। তোমাকে, অসুস্থ তোমাকে না দেখে থাকার এই শাস্তি আমাকে কেন দিলে, দিলা। আমি যে আর পারি না। বড় ভয়ে ভয়ে এই রাতটা কাটাচ্ছি। তোমার অসুস্থতা কতোটা গুরুতর তা জানার চেষ্টা না করে আমি খুব পাপ করেছি। আমার যাওয়া উচিত ছিলো ঐ রাতেই অথবা পরদিন ভোরে। জানি না কাল গিয়ে তোমাকে কী অবস্থায় দেখবো। তোমার অসুস্থতার গুরুত্ব ওরা বা তুমি কতোটা দিয়েছো তাও তো জান না। আমার এই বোকামি না আবার সারাজীবনের অনুশোচনার ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। বড় ভয় হচ্ছে। নিজের উপর প্রচণ্ড রাগ হচ্ছে। দু’দিন দু’রাতে এই উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তায় না থেকে সমস্ত লোকলজ্জা ঝেড়ে ফেলে ছুটে যাওয়া উচিত ছিলো আমার। কোমল, তোমার যদি কোনো ক্ষতি হয় তো নিজেকে আমি ক্ষমা করতে পারবো না। আর চিকিৎসার কোনো অবহেলা হয়ে থাকলে ইতিমধ্যে তবে তোমার আত্মীয়দেরও ক্ষমা করবো না আমি। তুমি কি কোনোভাবে আমাকে একটা খবর দিতে পারতে না, কোমল।
জানি না কী অবস্থায় আছো। নিজের এই গাফিলতির জন্যেও চুল টেনে ছিঁড়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে। এতোটা বোকামি কেমন করে যে আমি করলাম। বুঝতে পারি না।
আল্লাহর কাছে দোয়া করি তুমি সর্বাঙ্গীণ কুশলে থাকো।
তোমারই ‘জীবন’ ৩/৪/৮২
শনিবার
রাত আনুমানিক ২ : ৩০/ ৩টা
কোমল, আমার কোমল
এই মুহূর্তে চিন্ময়ের কণ্ঠে “ভালোবেসে সখি নিভৃতে যতনে আমার নামটি লিখো তোমার মনের মন্দিরে” বাজছে, একটু আগে বাজছিলো “কেটেছে একেলা বিরহের বেলা আকাশ কুসুম চয়নে”। গতকাল (১২.৪.৮২) একটা যন্ত্র এনে ঘরে তুলেছি। কাল রাতে কোনো গান ছিলো না। সারারাত আলো ছিলো না। অথচ সারারাত একফোটা ঘুম ও হলো না। অন্ধকারে বসে বসে কাল সারারাত সিগ্রেট ফুঁকেছি— তোমার আদেশ মতো ভালো ভালো চিন্তাই করেছি। একটি আদেশ শুধু অমান্য করেছি। ডাক্তার দেখাইনি। একদম ইচ্ছে করছিলো না। তাছাড়া নিজের চিকিৎসা করাতে যাওয়ায় লজ্জিত বোধ করলাম। কিছু মনে করো না। আমার কিছু হবে না। ভালোই তো আছি।
কোমল, তুমি যাওয়ার পর খুব ফাঁকা লাগছে। তাছাড়া তুমি কবে আসবে তা পর্যন্ত জানা হলো না। তুমি ঢাকায় নেই মনে হয় অনেক দূরে কোনো এক নদীতীরে, আমার কল্পনারও ওপারে, তুমি দাঁড়িয়ে রয়েছো আমার দিকে পিছন ফিরে নদীর অপর তীরের দিকে তাকিয়ে। বাতাসে তোমার চুল উড়ছে, আঁচল উড়ছে। তোমার মুখ আমি সত্যি দেখতে পাচ্ছি না। তোমার চোখ কি খুঁজছে ওপারে আমি জানি না। কল্পনা করতে পারছি না। জানি, কালি গঙ্গা এমন কোনো নদী নয় আর তোমার গ্রামও হয়তো সত্যি সত্যি কোনো নদীতীরে অবস্থিত নয়। তুমি কাছে থাকলে, সশরীরে, তোমাকে ছুঁতে ইচ্ছে করে, জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছেÑ চুম্বনে ও আলিঙ্গনে অস্থির করতে ইচ্ছে করে এবং ওসবই স্বাভাবিক। কিন্তু এখন এই মুহূর্তে, আমি ভাবছি শরীরটা হয়তো খুবই জরুরী ব্যাপার নয়Ñ আমার মন কী এক অজানা বিষাদে ভরে উঠছে। তোমার আত্মাকে স্পর্শ করার জন্য আমার অন্তরাত্মা ব্যাকুল হয়ে উঠছে। শরীরের বাইরের ব্যাপারটিই এখন এই মুহূর্তে, তোমার অনুপস্থিতিতে জরুরী হয়ে উঠছে। কোনো কারণ নেই, অথচ কেবলি যেন মন বলে উঠছে তোমাকে বোধহয় আমার পাওয়া হলো না! কেন এমন মনে হচ্ছে আমার বলতে পারো, কোমল। তুমি কি এই রকম কোনো ধরনের সংকল্প বা কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব কিংবা আমাকে বঞ্চিত করার কোনো চষধহ করে বাড়ি গ্যাছো। এক অজনা আশঙ্কায় আমার মন কাঁপছে। তোমাকে আজো আমি পুরোপুরি বুঝতে পারলাম না। অথচ তেমন রহস্যময়ও তুমি নও। তবে এটুকু বুঝেছি যে, অসম্ভব দ্বিধার দোলাচলে তুমি অহর্নিশ (প্রতিটি ব্যাপারে) দুলছো। আমার ব্যাপারে তো বটেই। আজ পিছন ফিরে তাকাতে খুব ভয় হয়। জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়টা নিজেকে বঞ্চিত করে ও অন্যকে কল্পনা করে এলাম। এবং এই বয়সে এসে তোমাকে জীবনে জড়ালাম। তোমার কুমারী জীবনের যোগ্য বলে নিজেকে কখনও ভাবতে পারি না। একটা অপরাধ বোধ সর্বক্ষণ আমাকে তাড়া করছে।
কোমল, আজ ১৩.৪.৮২ (মঙ্গলবার) আজো তোমার কোনো খবর পেলাম না। হিসেব মতো আজ তোমার চিঠি পাওয়ার কথা ছিলো। রোববারে পোস্ট কররেও আজ চিঠি হাতে না আসার কোনো সঙ্গত কারণ নেই। অথচ পেলাম না তোমার চিঠি। কাল ও পরশু সরকারী ছুটি। তার মানে আগামী শুক্রবারের আগে তোমার কোনো খবর পাবো না। সাতটি দিন অতিবাহিত হয়ে যাবে। দিন তো কেটে যায়। কষ্টটাই যা কষ্টদায়ক আর কি! হয়তো এরকম আরো আরো দিন আমার জন্যে অপেক্ষা করছে। কষ্টের বেদনার। দেখা যাক।
তোমার একটি কবিতা দৈনিক বাংলায় ১১.৪.৮২ তারিখে ছাপা হয়েছে। কাটিংটা এই সঙ্গে পাঠালাম।
কি লিখবো। কিছু ভালো লাগছে না। “আমি ফুল না হয়ে কাঁটা হয়েই বেশ ছিলাম” মান্না দের এই গানটি কি তোমার মনে পড়ে। গানটি এখন বাজছে। ওর কণ্ঠের বেদনার সঙ্গে একাত্মতা অনুভব করছি। হৃদয়ের জমাট-বাঁধা বেদনার বরফ গানেই সামান্য গলতে পারে। বেদনার এই বরফ গলে জল তরল অনল হয়ে হৃদয়ের মধ্য দিয়েই প্রবাহিত হতে থাকে। কষ্টের লাঘব তাতে একটুও হয় না। আমার মুখস্থ করা তোমার মুখখানি বারবার চোখের সম্মুখে আনিÑ যেই চুমু খেতে যাই তখনি সরে সরে যায় সেই মুখ। কেন বলো তো? তুমি এই অল্প সময়েই অন্যের হয়ে যাও নি তো। তোমাকে বিবাহেচ্ছু সেই ভদ্রলোকের সঙ্গে দেখা হয়নি তো? তোমার বাবা-মা কেমন আছেন! তুমি?
আমি চমৎকার আছি।
‘জীবন’ ১৩/৪/৮২
রাত-