কবিতা

ভ্রমণের ধারাবাহিকতায় এবং অন্যান্য কবিতা

এল সালভাদর ; কোনো এক দেশের নাম

টুপটাপ বৃষ্টি হচ্ছে
এইদিকে কোথাও
আর কামরাঙা গাছ
থতমত দাঁড়িয়ে ভিজছে

সম্পর্কিত

আমাদের থেকে আরও দূরে, তখন ঠিক বিকাল , বৃষ্টিতে গলে যাচ্ছে এল সালভাদরের মেয়ে । ” ফিয়াস্তে দে আগস্তো ” সে নাচছে বুনো অর্কিডের মতো, কি মোলায়েম হাওয়ার দোল । পবিত্র যীশুর নামে যে দেশের নাম, তার কিশোরীরা বৃষ্টির প্রকৃত ইতিহাস জানে। বৃষ্টি যীশুর অশ্রু, বৃষ্টি যীশুর অশ্রু, বৃষ্টি যীশুর অশ্রু… বৃষ্টিতে একবার ঠিকঠাক ভিজে গেলে আর কোনো পাপ থাকে না । এল সালভাদরের মেয়ে বৃষ্টিতে গলে যায়, সে প্রার্থনা করে ” হে পবিত্র ঈশ্বর , সাগরের সকল ঢেউ তোমার, দক্ষিণের সমস্ত পর্বত তোমার, সব কফি ক্ষেতের ঘ্রাণ তোমার । হে পরম দয়ালু, তুমি আমাদের পাপ করার সঙ্গতি দিয়েছো এজন্য তোমার কাছে আমরা কৃতজ্ঞ , তুমি আমাদের পূন্য করার ধৈর্য দিয়েছো এজন্যও আমরা তোমার কাছে কৃতজ্ঞ । হে সৃষ্টিকর্তা, তুমি আমাদের সকল শিল্প সম্পর্কিত জ্ঞান দিয়েছো আর সামর্থ দিয়েছো বৃষ্টি এলে আমরা যাতে গান গাই । হে মহান ত্রাতা, আমাদের সমস্ত প্রার্থনা তুমি শুনে রাখো, আমাদের হৃদয়ে একটা গাছের বীজ বুনে দাও, আর তোমার করুণার বৃষ্টিতে ভিজিয়ে দাও সমস্ত পৃথিবী । ”

চমৎকার কামরাঙা গাছ
আমার হৃদয়ে বাড়ছে
আর বৃষ্টিতে ভিজছে
এল সালভাদরের মেয়ে

আমেন ।।


ভ্রমণের ধারাবাহিকতায়

যেখানেই ঘুরতে গিয়েছি —
অভিনব একঘেয়েমি, অতিকায় কিছু ভেবে
একটা উল্টানো পাতা নেড়েচেড়ে দেখি।

এ-ও তো সবুজ ও শ্রী

ঘুণাক্ষর ভাবতে পারিনি , দেখার তাৎপর্য
নাহলে একটা ফণীমনসা কেনো বন মনে হয় (!)
যেনো কোথাও ধাধাঁ আছে, সমাধানে তৎপর হই
চোখের মণি ভালো করে দেখে, ওঝা জানায়
দক্ষিণের দিকে তাকাও — দেখি একটা নুড়িপাথর ;
আমার সমাধান নেই। দক্ষিনের পাহাড় জানালো।

কার্যত স্বান্তনা শুনবো না আর, তুমি ও তোমাদের
স্মৃতি হিসাবে যেটুকু শোনালাম পারলে ছড়িয়ে দিও

কেউই শুনতে পাচ্ছো না যেহেতু
ও বুঝানোর বিভ্রম
আরও স্তব্ধতার দিকে যাবো …………..


প্রায় প্রতিদিন পতঙ্গ

সব সম্ভাবনা খারিজ করে দিচ্ছি
এক উজ্জ্বল গোলক — স্নায়ুতে চাপ দিচ্ছে

কেবল উড়াউড়ি, তৃণ ও গুল্মের বনে
শস্যক্ষেত পরিপূর্ণ হলে তাদের আনন্দ হলো
একসারি দুই সারি করে উদযাপন

আপাতত অবসর তাড়িত রাত
সব প্রচেষ্টা ও কীটনাশক বিফলে গেলো

এমন ওষুধ কি কোথাও নেই, অথবা এমন কোনো সংগীত — আমাদের রূপান্তরিত করবে । ঝকঝকে জোছনায় একজন লবনচাষী ছুটবে সমুদ্রের দিকে, সে তখন কচ্ছপ । দেবশিশু বলে ডাকা বাচ্চাটি হাতুড়ি দিয়ে তার খোলস থেঁতলে দিবে, আয়োজিত হবে পিঁপড়ার ভোজসভা । এমন স্বপ্নালু ওষুধ কোথায় , আমাদের একটা দৃশ্যপট বদলানোর ভাষাও দিতে পারে না।

আমার অনিষ্ট হলো
সবশেষ ক্ষেত সমাপ্ত হলে তাদের উন্নতি
তৃণভোজী পঙ্গপাল খাদ্যের তাড়নায় পেলো মাংসাশী চোয়াল — উজ্জ্বল গোলক স্নায়ুতে চাপ দিচ্ছে।
এ এক সহজ আলকেমি, আমি পতঙ্গ হয়ে যাচ্ছি
আমার অনিষ্ট হচ্ছে, হয় এমন প্রায় প্রতিদিন।

আপনার মতামত জানান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button

দুঃখিত, কপি করা যাবে না।