কবিতা

পুঁথির পাতা থেকে [দুই]

যদি ফ্রয়েডের মতো ভাবি তাহলে পরাবাস্তবতা অবচেতন মনের বাস্তবতা হিসেবে বিবেচিত হবে। ‘পুঁথির পাতা থেক ‘ সিরিজের কবিতায় ঘোরগ্রস্ত বা অবচেতন সময়ের চাপ পষ্ট। তাই বেলাল আহমেদের এই সিরিজের কবিতা পড়লে কখনো মনে হবে পরাবাস্তব, কখনো আবার যাপন আর যন্ত্রনার দৃশ্যকল্প। দ্রাবিড়ের সূচনা সংখ্যায় ‘পুঁথির পাতা থেক ‘ সিরিজের চারটি কবিতার পর আজ একই সিরিজের আরও চারটি কবিতা প্রকাশ করা হলো।



দরিয়ার ঢেউ ভাঙে রাজস্থান
আকাশ জুড়ে বিলাপ;
গুপ্ত গোরস্তানে মগ্ন আয়ূ
পাতায় লিখ; বয়স

সম্পর্কিত

কাঁটায় হাতড়ে দেহ বদল হয়
গন্তব্য মিলে না তবুও
মৃত্যু মিলে জলের শবরে
মরুর আকাশে; তরুহীন

রাধার সকাশে অস্থির তুফান
সবুজ স্তনে চণ্ডালিনীর সখিমুখ
আমার ভালোলাগে না আজ
গোরস্তানে আমি মাকু বাজিকর


গোখরার মেলায় হারিয়েছি পক্ষপুটের উষ্ণতা
রোপার কবচ, বিলোল কটাক্ষ, চণ্ডীর প্রেম
এদের কোনো আরোগ্য নিকেতন নেই; লোভও
পক্ষপাতহীন; ঈশ্বর ছিলেন না কোথাও সেদিন

তবু রোপার কবচ খুঁজে খুঁজে যে আয়ুপাত;
তার পেছনে এখন আমার ছেলেরাও ঘুরে

অনাহতা; আরও দূরে, আলিঙ্গন থেকে
কুসুমালোর পথে বয়ে যায় ধীরে; মৃত্যু

আমি শিশুদের মতো কোনো—
সুগম্ভীর জীবন পেলাম না


কুমারের পুত্র
রাজনটির সঙ্গে—অন্ধকারব্যঞ্জনে,
সুগম্ভীর কটাক্ষ বিলোয়

তুমুল উচ্ছন্নপ্রিয় রাতের—
শবরে পুড়ছিল আদিভূমির গান,

নির্জন হীমনীড়ে নৃত্যরত মৃত্যুমহুয়া

কুমারের পুত্রের তো নির্লিপ্ত নয়ন,
ময়য়ূরীর আয়ু নিয়ে খেলে।


বিলম্বহেতু; পাড়ি দিতে হয়
তীর ও তিরস্কার
মহুয়াজঙ্গলে তার
কাটকলমের সংসার

গাছে গাছে লটকে
রাখে দুঃখ; দেবদূত,
ত্রিভঙ্গ পতঙ্গের লোহিত—
উত্তেজনা, প্রেরণাস্বরূপ

আগন্তুক জোৎস্না মৃত্যুর
জামা খুলে দঁড়িয়েছে; নটরাজ
গ্রীবায় টোটকার দাগ

আপনার মতামত জানান

বেলাল আহমেদ

বেলাল আহমেদ; কবি, গল্পকার ও আলোকচিত্রী। জন্ম ১৯৮৩ সালের ৫ জুলাই সিলেটের বিশ্বনাথে। পেশায় সাংবাদিক। দৈনিক সিলেট মিররে কর্মরত। প্রকাশিত বই- ‘স্বপ্নভোক শালিক’ (২০০৭) , ‘উফাক’ (২০০৯)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button

দুঃখিত, কপি করা যাবে না।