যদি ফ্রয়েডের মতো ভাবি তাহলে পরাবাস্তবতা অবচেতন মনের বাস্তবতা হিসেবে বিবেচিত হবে। ‘পুঁথির পাতা থেক ‘ সিরিজের কবিতায় ঘোরগ্রস্ত বা অবচেতন সময়ের চাপ পষ্ট। তাই বেলাল আহমেদের এই সিরিজের কবিতা পড়লে কখনো মনে হবে পরাবাস্তব, কখনো আবার যাপন আর যন্ত্রণার দৃশ্যকল্প। এখানে এই সিরিজের আরও তিনটি কবিতা প্রকাশিত হলো।
ঝ
নদী ও বৃক্ষের গতরে লৌহরক্তরেণু,
পাতাবনের ভেতর, মেঘনটীনীর হৃদয়—
ঘাড়ে উপহাসের লাল কবচ
যেন অপরূপ বায়ুমদে শবপ্রাণপ্রতীক
আমার বাহুজুড়ে নটীনীর কামুক বাকল;
বকুল ও মহুয়াপাখির মতো জ্বলজ্বল করে
পাতাআয়নায় ময়ূরী যতক্ষণ নৃত্যরত ছিল;
কুঞ্জে নিরালায়, প্রান্তিক নীড়ে ও ভিড়ে
কৃষ্ণচন্দন দেখেছি; স্তন আর হৃদয় দেখিনি।
ঞ
অসংলগ্ন বায়ুসংকটমাখা চৌহাট্টা
জন্মকথা বড় বেশি মায়ারঙ মাখা
এ কথা বোঝেনি, সদম্ভ, কাঁচের গেলাসে—
অপেক্ষা করছে পাখালি, গভীর স্বনন
প্রাণঘনতায়; সে আমার মনেও নেই
সমুদ্রফেনার মতো স্নিগ্ধ গড়ন;
জলকল্লোল
নিখিলবৃক্ষও কি সময়ক্ষয়ের মতো হয়?
বৃক্ষনির্জনতা উড়ে যায় ভারতসাগরের দিকে
এও এক সুস্থির জীবনবেদ
ট
মাছনৃত্যের মতো দুলছে
ভোর; প্রহেলিকা, হাসো
মৃদুবিষণ্ণচোখ, বহুদিকে—
আমি বলে যাই, তারা শুনছে না
দূরে কথা বলে বসন্ত—কোকিল
নিজস্ব পাতাস্বর, চারিদিকে গর্জন
সে তবু স্ব—স্বপ্নে ঘুমিয়ে পড়ে—
বুকে নিয়ে দুঃখের সওয়াল