কবিতা

পাথরকুচির বনে এবং অন্যান্য কবিতা

পাথরকুচির বনে

বারান্দায় পাথরকুচির বনে
তুমি ডুবে যাচ্ছ আর আমি তোমার দিকেই
হাঁটতে থাকি,
যেন ঘোরগ্রস্থ জীবনে রবীন্দ্রসঙ্গীতের সাঁকো।
প্রতিরোধ করি,
হাওয়ার জমিনে কান পেতে
নাভিতে ফুল ফোটার শব্দ শুনতে পাই।

সম্পর্কিত

সুরম্য নকশার পাশে তোমার মুখ
তাকিয়ে চোখ পুড়িয়ে ফেলি!


অনুমতি

জীবন শব্দটাই বড় বাড়াবাড়ি
তবুও এমন মিশে যাই উদ্যম ছাতিমতলায়।
একটা গতি এখনো
কুয়াশার দিকে ফিরে রাতভর
স্মৃতিস্তম্ভের ফাটলে কান পেতে মাঝদুপুরে,
মৃত্যুর রাজ্যে দাঁড়িয়ে থাকি।
অনুমতি পাই যদি
যা আসন্ন তার জন্য নেমে যাব
জলে অথবা কোলাহলে,
মৃত্যুর নির্জীব পাখনার মতো নির্বাক নিরাকার।


গোমতির চর

গোমতি আর গোমতির চরের বালুতে
বয়সন্ধির সমস্ত পরাবাস্তবতা, ছিপ ফেলে
অদৃশ্য হয়ে যায়!
গাঢ় স্ট্রেট ড্রাইভে ঝাপসা হয়ে যাওয়া
টেপ-টেনিস বল
ভুল জমিনে মিস ফিল্ডিং-এ
তোমার রাত জাগার পাশে এসে
থামে।


নাকফুল

এমন শীত পেরোনো দিনে
গুম হয়ে যাওয়া স্মৃতির শহরে
হারিয়ে গেছে তোমার নাকফুল।
ইচ্ছে করে সমস্ত পিচ ঢালা
বিকেলের দিকে ফিরতে-ফিরতে
সেলাই করে নেই দুটো চপ্পল
তারপর নিঃশব্দে হ্যং হয়ে যাই
হারানো বিজ্ঞপ্তির সংলাপে।


ডাবল ডেকার

তোমাদের ভীড় আর
বিকেলের যানজট– গলে পড়া ফোয়ারার
প্রস্রবণ আড়াল করে নড়ে ওঠে।
সভ্যতার নিরুত্তাপ মুখোশের মাঝখানে
সমস্তই যখন মামুলি,
তখন বহু জানালার ওপাশে
আহত হাওয়ার কাছে ডাক আসে–
শহরে জেগে ওঠে অরুন্তুদ
বিআরটিসির রক্তিম ডাবল ডেকার থেকে।


আশ্চর্য কুমকুম

তোমার নৈঃশব্দ মুখর হলে আজকাল
আমাকে তুমি নিরস্ত্র শব্দের ছিন্ন কংকালে
ফেলে রাখ একা-একা,
দেখতে দেখতে স্থির কোনো বিন্দু থেকে
উড়ে গেলে তারা
নির্জন আকাশগঙ্গার চেয়েও স্তব্ধ
হয়ে ওঠে মন।

বেভোলা মাটির বুক থেকে শুষে নেই
আশ্চর্য কুমকুম–দূরত্বের পাঠক্রমে
তর্জমা হতে থাকি আঁধারে একাকী।

 

আপনার মতামত জানান

অজিত দাশ

অজিত দাশ; কবি ও অনুবাদক। জন্ম ১৯৮৯ কুমিল্লা শহরে। কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এ পড়াশোনা । কাজ করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। প্রকাশিত বই- ওশোর গল্প (বেহুলাবাংলা, ২০১৮) ও প্রজ্ঞাবীজ (মাওলা ব্রাদার্স, ২০১৯)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button

দুঃখিত, কপি করা যাবে না।