কবিতা

পতনের গতির বিপরীতে

পতনের গতির বিপরীতে

পুত্রের জন্য মেয়ে দেখতে গিয়ে পিতাও প্রেমে পড়ে গেলে, থমকে দাঁড়ায় বহতা বাতাস। দমবন্ধ মুগ্ধতায় ডুবে যায় উজ্জ্বল মুখ।

সম্পর্কিত

মনে পড়ে আব্বাও একদিন এক মেয়েকে পছন্দ করেছিলেন।
আম্মাকে এসে বলেও ছিলেন সেইকথা।
বর্ণনা শোনে আম্মা জানিয়েছিলেন, সেই মেয়ে তোমার পুত্রের প্রেমিকা।
আম্মা আমাকেও অবগত করেন এই সংবাদ।

পুত্রকে আমি বেছে দিতে যাবো না কিছুই।
নিজের মত খুঁজে নিক প্রেম, প্রতারণা ও উত্থান।

সবার রয়েছে আপন পথ খুঁজে নিবার দিশা।

যে আপনাকে খণ্ড করে ফেলে যাবে পথে,
তাকেই পেয়েছে সকলে ;
অতঃপর অখণ্ড সত্তা বিশ্বাসের জোরে ফিরে পাবে
কিন্তু নিজ হাতেই গড়তে হবে আপন মূর্তি।

তাই বলি, পুত্রের জন্য প্রেমিকা খুঁজতে যেয়ো না।


‌‌বিবর্ত

পুনরুৎপাদিত বুদ্ধ হার্মান হেসের কাছে ঋণী;
মার্ক্সীয় অর্থনীতি এই বিষয়ে কী বলে জানতে খুব ইচ্ছে হয়

সিদ্ধার্থ কবি ছিলেন না, বরং কিছুটা প্রেমিক;
আগুন সব কিছুকেই পোড়ায়, আপন আনন্দে
–অগ্নিই তমোহর সাত্ত্বিক!

ধ্যানের মগ্নতায় পায়েসান্ন ভোলেছিলেন গৌতম;
হার্মান হেস অনেক জেনেছেন, রাহুলের চাইতে কিছুটা কম

রাহুল সাংকৃত্যায়ন বুদ্ধকে মার্ক্সবাদী বানিয়ে ছেড়েেছেন,–
এই সব নিয়ে নিজের সঙ্গেই আলাপ তুলি,
অন্য মন বলে, বরং ভাবো না কেন :
মার্ক্সকেই পাল্টিয়েছেন তিনি কিছুটা বুদ্ধে

হেস কি রাহুলকে জানতেন?

বুদ্ধ নিশ্চুপ বিলিয়ে গেছেন সব,
আমাদের জড়িয়েছেন আপন যুদ্ধে, বোধিদ্রুম তলে;
সামান্য কেশে ডারুইন বলেন,
আমার তত্ত্ব তবে পুরোপুরি যায়নি বিফলে।


দিশা এবং বিভ্রমের মাঝামাঝি

পুড়ে গেলে ক্ষত মোছে না,
মাটিও উগড়ে দেয় পোড়া ইট, হজম ব্যতিরেকে।
ফিকির কোনো অচেতন কর্ম নয়;
স্বকল্প-বিষাদ ক্রমে আক্রান্ত করে।
অভিজ্ঞতা ঋজুতা অন্বেষণে স্থিত;
–যার মর্মোদ্ধার পথের দীর্ঘসূত্রিতা দাবি রাখে।

রাস্তা নিজেকে পাড়ি দিতে পারে না।
–এই লোককথার আশ্রয় নেয় মনস্বিতা।
ফলে যার অগ্রে বাড়ি ফেরার তাড়া,
সে যথার্থ পথ খুঁজে পায় না।


স্থিতি

হাসি দেখে অবাক হয়ে গেলে,
জেনো, ব্যথাও একান্ত বিরহ।

পুত্রের ঘুমের ভেতর প্রেম সান্নিধ্য খোঁজে;
স্ত্রী আমাকে বললেন, তুমিও ঘুমাও।

রাগ হেতু আরও জাগরণ সমৃদ্ধ রাতে
সমস্ত নিয়ে মজে আছি।

নিজেকে আলাদা পোষ মানাবার কসরত করে
যেতে হয় প্রত্যহ,
আপনার কাছে হাত পেতে ভূমিকা অতিশায়িত করি না,
তারচেয়ে ধীরে নীতির গোড়াতেই গলদ
সাফ করতে করতে সংঘাত এড়িয়ে
হাঁটু মোড়ে বসে পড়ি–

তবু আপনার ভেতরের হাসির দমক এড়াতে পারি না!

আপনার মতামত জানান

শামশাম তাজিল

শামশাম তাজিল; কবি। জন্ম ১ এপ্রিল ১৯৮৪ সালে। প্রকাশিত কবিতার বই ‘আলিফ এক মূর্খের ফিকির’. ‘আরও শাহানা ফেরদৌসী’, ‘আদম পাহাড়’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button

দুঃখিত, কপি করা যাবে না।