বই : নিরন্ন আললা
লেখক : আজিম হিয়া
প্রকাশক : উপকথা
প্রচ্ছদ : নাওয়াজ মারজান
পুরআন
মিনারটা অনেক উঁচুতে;
আমাদের মাঝখানে—
পবিত্র গ্রন্থসমূহ
পুরনো কফের মত
যুগ যুগ জমে আছে—বিব্রত!
শুধু ক্ষণে ক্ষণে
শুকনো কাশির হুল্কা
জানান দিচ্ছে
আমাদের
অসুস্থতা।
দ্বৈধব্য
সে এক সুর!
অদ্ভুত আঙুলের ইশারা—ভাষা নেই
পৃথিবীর চোখে—
কোনো এক অস্থির চোখ।
কী কথা—কে গায়?
ঈশ্বর! বাতিল মাল।
ব্রেকআপ
অতি সাধারণ বণিক আমি—পৃথিবীতে
সময় বেচতে এসে ভুলবশত বেচে দিলাম
তোমাকে।
আমি জানি, অতীত একটা মরা সমুদ্র
আর তুমি এমনই এক মৃত্যুময়ী শ্মশান—
আমায় খুন করেও নিজেকে খুনী ভাবছো না।
অথচ আমি মরি নাই—শুধু চলে গেছি
মৃত্যুর চোখেমুখে রঙফুল ছিটিয়ে ছিটিয়ে…
বাংলাদেশ
এটা হাসপাতাল
মানুষের মতোই
হাজারো সকাল
দাঁড়িয়ে সারিবদ্ধ লাইন হাতে;
অতঃপর দুপুরে
বিকেলে, সন্ধ্যায় ও
রাতে—নিজেকেই
নিজে খেয়ে নেয় নিজ নিজ পাতে।
কচ্ছপে-খরগোশে
দৌড়যোগিতা খেলে—
জেতে আর হারে
যেনো সময় ঘুমায়েছে অকালে;
ইতর জামানায়
নষ্টরা আরো স্পষ্ট
হলে—অজনারা
যেনবা নিজে নিজেকে জেনে ফেলে।
মসজিদ—মন্দির
একই ছায়াতলে
মুখোশবিহীন
দিনমান মুখোমুখি বসে থাক্;
হে সুমহান, তুমি—
আছো কিংবা নাই
দ্বিধা—দ্বিধাহীন
যেন আমরা উভয়ই নির্বাক।
রাষ্ট্র চৌকস জোঁক
চুষে নাও আমায়
আমাদের ঘামে—
প্রেমে ও শক্তিতে—তুমুল তৃষ্ণায়;
আমরা নিজেদের
ফেলনা ভাবি না তো
যদিও মাখি না
নিজ তেলটা নিজের চড়কায়।
শব্দার্থগুচ্ছ
অচেনা
হয়তো চিনতে না চাওয়া;
অভিমান
এমনই চৈতি হাওয়া!
দুঃখ
আদিম স্থাপনা—
মানুষ চিরকাল ইট গেঁথেই চলেছে।
সুখ
আধারে আঁধার ঢালো চোখে মাখো চোখ
চিতার আগুনেই দেখো আছে সব সুখ।
চোখ
১.
ক্ষুধার্ত মানুষের চোখ সুন্দর দেখায়।
২.
চোখ—কখনও কি চোখ থেকে সরে
পা’য়ের থেকে নোখের থেকে শেখো
নিজেকে কুড়িয়ে নিজের ভেতরই রেখো।
চিন্তা-ভাবনা
ভাবনা আমাকে ভাবনায় ফেলে দিল
চিন্তা আমায় টেনে আনলো ধ্যানে;
কোনকিছু না ভেবেই আপনাকে করেছিলাম ফোন
ভাবনা আমার মেয়েটির নাম—চিন্তা আমার বোন।
অবসর
অবসর না-কি অবকাশ?
আমার তো ব্যস্ততাই প্রিয়—
কর্মস্থলই মুক্ত আকাশ!
জাম কিংবা জ্যাম
জাম, যতোটা না জাম—ততোটাই কালো
জ্যামও ঠিক তাই, হাঁটো—হন্টনই ভালো।
সমুদ্র v কবি
সমুদ্র—উত্তাল হলে পরে মানুষ প্রেমিক হয়ে ওঠে
আর কবিগণ ভুলে যায় নিজেদের নাম-দাম-স্থায়ী ঠিকানা।