অনুবাদ

জন এলিয়া ও তার গজল

বিমুখী জীবন থেকে পালাতে না পারার তীব্র যন্ত্রণায় ছিলেন অস্থির। এই যন্ত্রণার খুশবু ছড়িয়ে পড়ে তার গজলের পরতে পরতে...

‘এলিয়া জন কুছ ন্যাহি কারতা
স্রিফ খুশবু ম্যাঁ রাঙ ভারতা হ্যা’

(কিছুই করে না এলিয়া জন
শুধু, রঙ দিয়ে সুগন্ধিকে পূর্ণতা দেয়)

সম্পর্কিত

বিভক্ত ভারতের আমরোহা অঞ্চলে বেড়ে ওঠা তার । ভারতভাগের পর চলে যান পাকিস্তানে। তবে এজন্য আফসোস করতেন। তাই তার অনেক কবিতা-গজলে ভারতের মাটির গন্ধ অনুভব করা যায়।

ফার্সি, আরবি, উর্দু, ইংরেজিসহ বহু ভাষা তার আত্মস্থ ছিলো। কিন্তু কবিতা তিনি প্রচিলত ভাষায় লিখতেন। কবিতার ভাব ও ভাষার যে গভীরতা, তা থেকে বেরিয়ে এসে বাস্তবতার সঙ্গে মিশে গিয়ে রচনা করতেন তার পদ-পঙতি। তার গজলের বিষয়বস্তু ছিল যাপিত জীবনের বিরহ-বেদনা, হতাশা ও বাস্তবতা।

সমাজ মানুষের জীবনে যে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে, এইসব বেড়াজাল ভেঙে জন তার নিজের মতো সাজানো এক জগৎ-সংসারে পালিয়ে যেতে চাইতেন। তাই তার মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা কাজ করতো। বিমুখী জীবন থেকে পালাতে না পারার তীব্র যন্ত্রণায় ছিলেন অস্থির। এই যন্ত্রণার খুশবু ছড়িয়ে পড়ে তার গজলের পরতে পরতে।
কবিতা লেখা শুরু করেন আট বছর বয়সে। বই প্রকাশ হয় তার মৃত্যুর বছর।

জন এলিয়ার জন্ম ১৯৩১ সালের ১৪ ডিসেম্বর। তার মূল নাম সৈয়দ সিবত-ই-আসগর নাকভি। কবি হিসেবে তিনি জন এলিয়া নামে প্রসিদ্ধ। ২০০২ সালের ৮ নভেম্বর পাকিস্তানের করাচিতে তার মৃত্যু হয়।

ভূমিকা ও তরজমা : নাওয়াজ মারজান



কেন যে আয়নার দিকে তাকাও
তুমি তো নিজের চেয়েও সুন্দর

 


আমার সকল বন্ধু কাজ করছে
অথচ তাদের মধ্যে আমিই শুধু বিখ্যাত

 


অবশিষ্ট বলতে জীবনে আমার আর কিছুই নেই
এখনও কি তুমিই আমার জীবনসর্বস্ব ভাবো

 


যেটুকু জীবন বাকি আছে তা নষ্ট না করে
ভালো হয় ভুলে যাও আমাকে

 


কার আশায় কাটিয়েছি এ জীবন আমার
কে সে? কখনো দেখিনি তারে

আপনার মতামত জানান

নাওয়াজ মারজান

নাওয়াজ মারজান; প্রাবন্ধিক ও প্রচ্ছদশিল্পী। জন্ম ১৯৯৪ সালের ৮ অক্টোবর সুনামগঞ্জের জামলাবাদ গ্রামে। দৈনিক সিলেট মিররে কর্মরত। প্রকাশিত বই- সামেরির সোনার বাছুর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

দুঃখিত, কপি করা যাবে না।