জুয়েইরিযাহ মউ ‘খুলিতে হাসপাতাল’ শিরোনামে সিরিজ কবিতা লিখছেন সম্ভবত ২০১৭ সাল থেকে। যাপিত জীবনের ঘটনা আর বসবাসের কাহিনি-ই তার কবিতার অনুষঙ্গ।
দ্রাবিড়ের পাঠকের জন্য এ সিরিজ থেকে জুয়েইরিযাহ মউ-এর ৪টি কবিতা প্রকাশ করা হলো।
প্রিয় বীজগণিত
রোদ-রোদ কালে বীজগণিত কষতাম। নিউজপ্রিন্টের দিস্তা কাগজ সাদা-নীল পাকানো সুতোয় বাঁধাই করে দিতো বাবা। এতো প্রিয় ছিল ম্যাটাডোর জেলপেন কিন্তু এই খাতাগুলোর সাথে ইকোনোরই বেশি লেনদেন ছিল। অঙ্ক কষতে কষতে অঙ্ক করার নেশা হয়ে যায়। টেস্ট পেপার খুলে বসে আর আরদের দেওয়া পরীক্ষার সব অঙ্ক কষে ফেলতাম। আর আরদের দেওয়া পরীক্ষায় উতরে গেলেই পার পেয়ে যাবে তুমি – এইরকম একটা কথা আমাদের আশৈশব শেখানো হল!
অথচ প্রত্যেকের পরীক্ষাই শেষমেশ কী দারুণ ভিন্ন !
শ্যুটিং কাল
ফিরে আসছি কক্ষপথ ধরে
পড়ে থাকছে ধুলো-সময় রোদ
ফেলে যাচ্ছে মানুষ মুহূর্ত ছেড়ে।
ফিরে আসছি পৃথক পৃথক ঘরে!
পড়ে থাকছে উপচে পড়া মায়া
নবগ্রামের মালাই চায়ের সরে!
৩১/১০/২০২১
একলা ঈশ্বর
তুমি প্রকাশ্যেও ভীতু
তোমার দোরগোড়াতে জ্বর
তুমি চাঁদকে শেখাও আকাশ
তোমার কল্পনা সম্বল!
আমি তেজী এবং মাতাল
স্বরে অশ্রু টলমল
নারীর নাভীমূলে জগৎ
আমি একলাই ঈশ্বর!
স্মৃতি-সুখ পাখি
সবকিছু থেকে যায় পৃথিবীতে
মাঘের নরম রোদ,
প্রিয় ঘোর-দোর সুখ
শুধু মানুষ থাকে না।
মানুষ কী অত্যাশ্চর্যভাবে
মিশে যায় নরম মাটিতে
পুড়ে যায় কেরোসিন-কাঠে।
আলপনা আঁকা কপাল
চোখ মুখ গাল
ঠোঁট পেরিয়ে তিল ও চিবুক
সমস্ত নিভে যেতে যেতে
থেকে যাবে তোমার স্মৃতিতে!
মানুষ কী ভীষণ কাঙাল
যেতে যেতে দিয়ে যেতে চায়
তীক্ষ্ণ কোন স্মৃতির ভার
আর মানুষের নরম গভীরে!
আপনার মতামত জানান