কবিতা

কটাক্ষে এবং আরও চারটি কবিতা

কটাক্ষে

তার দৃষ্টিতে ছিল প্ররোচনা ও চাতুর্য এবং
সে যথারীতি রাক্ষস বংশীয়।
আর সে পোশাক পরিবর্তনের মতো মুহূর্তে বদলে নিতে পারে মর্মার্থ।

সম্পর্কিত

এদিকে আমার সমস্ত ফুরিয়ে আসে– আড্ডার উচ্ছ্বাস, প্রেম, জিকির, নদীর জোয়ার
ও নীতিবাগীশতা। অহম ফুরায় না।
ধীরে গোপনে লালিত সে সত্তা; — আরও প্রোথিত ছিল সামাজিক তুল্যরূপ, ফলে বিচারের মাপকাঠিতে
যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠিনি।

পত্রমোচি বৃক্ষের নিচে দাঁড়িয়ে দেখি, ততদিনে সমস্ত গান ফুরিয়ে গেছে।


ত্রোটী

ধীবরের চোখে দৃষ্টি ফেলে মাছরাঙা খুঁজে নেয় নিশানা।

মানুষ জলের ব্যাকরণ শিখে হাওয়ায় কসরত করে শিকার। হাওয়া বদলে গেলে যারা স্থান পাল্টায় তাদের বলেছ যাযাবর। অথচ তাদের পদচিহ্ন ধরে সভ্যতা এগিয়েছে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আফ্রিকা হয়ে সুদূর বরফের দেশে তারাই গড়েছে উদ্যান।

স্থানের নীতি মানে মাছরাঙা__ সেই বর্ণবাদী, তাতে সত্যের স্খলন ঘটে না, বরং তা প্রতিষ্ঠা পায় সহজাতরূপে।

মূলত শিকারে সমস্যা না থাকলেও মগজ স্বীকার অনীহ __ এই সত্য পুনঃপুন প্রতিষ্ঠা পায় পথে। পাখির পথ ভুল হয় না, শুধু উড়ার ইচ্ছা নিয়ে বেঁচেও আমরা উপলব্ধি করি না হাওয়ার ব্যাকরণ।


স্থিতি

হাসি দেখে অবাক হয়ে গেলে,
জেনো, ব্যথাও একান্ত বিরহ।

পুত্রের ঘুমের ভেতর প্রেম সান্নিধ্য খোঁজে;
স্ত্রী আমাকে বললেন, তুমিও ঘুমাও।

রাগ হেতু আরও জাগরণ সমৃদ্ধ রাতে
সমস্ত নিয়ে মজে আছি।

নিজেকে আলাদা পোষ মানাবার কসরত করে
যেতে হয় প্রত্যহ,
আপনার কাছে হাত পেতে ভূমিকা অতিশায়িত করি না,
তারচেয়ে ধীরে নীতির গোড়াতেই গলদ
সাফ করতে করতে সংঘাত এড়িয়ে
হাঁটু মোড়ে বসে পড়ি–

তবু আপনার ভেতরের হাসির দমক এড়াতে পারি না!


ব্যাকরণ

নারীর শরীর ভর্তি নদী।

__এই কথা বলা মাত্র পাশের সিটে বসা ম্যাডাম চোখ বড়ো তাকালেন
আমি চোখে সামান্য লজ্জার পর্দা নামিয়ে দিলাম
পর মুহূর্তেই তিনি খিলখিলিয়ে হেসে উঠলেন
আমি দেখলাম, উত্তাল নদীটি সাগরে মিশে যাচ্ছে
তিনি বললেন, আমাদের বাড়ির ছাদ থেকে ভালো নদী দেখা যায়, দিগন্ত প্রসারী।
তলিয়ে যাবো না তো ?
এই বলে উঠেই যাচ্ছিলাম
শুনতে পেলাম, পরিহাসপ্রবণ কণ্ঠে বলছেন
ভয় নেই ডুবে যেতে যেতে না হয় ধরে নেবেন শাড়ি!


বিধেয়ক

আম্মাকে চিঠি লিখতে ইচ্ছে করে
লেখাও যায়, কিন্তু গোরস্তানের পোস্ট কোড নাই
ফলে তার বাস্তবায়ন হয় না

অসুস্থতা হেতু বিছানায় শুয়ে দিন কাটে
কিছু করি না,
ঘাম মুছতে মুছতে গামছা ভিজে গেলে
তা শুকানোর আগে আমার ছেলেটা যুবক হয়ে যায়

আপনার মতামত জানান

শামশাম তাজিল

শামশাম তাজিল; কবি। জন্ম ১ এপ্রিল ১৯৮৪ সালে। প্রকাশিত কবিতার বই ‘আলিফ এক মূর্খের ফিকির’. ‘আরও শাহানা ফেরদৌসী’, ‘আদম পাহাড়’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button

দুঃখিত, কপি করা যাবে না।