একুশতম আঙুল
ওরা গিয়েছিল ট্রান্সিলভ্যানিয়ান পর্বতে
সমগ্র বল্কান চষে পায়নি তোমার ধাতব হাত
অথচ, আলপাইনে খনির ভেতর
তোমার একুশতম আঙুল আমার শরীরে
গেঁথে ছিল–
ধাতব ছুরির মতো।
ওরা দেখেছিল–
ভেড়ার দাঁতের ভেতর ঘাসের মিহি হাড়
আর আমার সোনালি চুলের শরীরে
তোমার পৌরব রোদ, সভ্যতার কালো ভ্রূণ;
পুরোনো হাড়গোড় আর দিনলিপি দেখে জেনেছিল–
দানিয়ুব আর কাস্পিয়ানের জলেজঙ্গলে আমরা দুজন লবন ধুয়েছি, মিলিত হয়েছি অধীর সঙ্গমে,
ওরা তখনও সমগ্র ভূমধ্যসাগর চষে পায়নি তোমার
দুইশত সাততম হাড়,
অথচ, সে অদৃশ্য হাড় আমার শরীরে গেঁথে ছিল
ধাতব ছুরির মতো!
ঘোর
এইখানে আমি আর আমার ভ্রমের সংসার
পৃথিবীর সবকিছু এসে আমারে দিয়ে গেছে ভোগ–
শিশুর কোমল হাত, তার ঠোঁটের নরম চাপে
গড়ায়ে পড়েছে বোঁটার চিকন দুধ;
আরো আছে ঘোরের ভিতর নীল হয়ে থাকা শীতে
জামের মতো কালো চোখ নিয়ে ধূসর শিশু
তীব্র কালো ঠোঁটে ছোঁয়ায় স্তনের বাট
গাল বেয়ে নামে শ্বেতশুভ্র নদী–
সে নদীতে বসে দেখি দারকিনা মাছ
মাছরাঙা এসে ছোঁ মারে তারে,
তুমিও কি একদিন প্রবলবেগে–
নিয়ে যাবে আমারে!
যেতে যেতে
এই পায়ে-হাঁটা পথে কতদূর চলে আসি
দেখি, আরো কত লোক হাঁটে দ্বিধাহীন
তারা কেউ ভীত নয়,
পথের পাশে পা মেলে অপ্রকৃতস্থ মেয়ে
ফুলে ওঠা লাশের মতো তার পোয়াতি শরীর
কারো ছুড়ে দেয়া রুটি খেতে খেতে
সেও ভেবে বসে, মারিয়ামের মতোই–
এ সকল শিশুর পিতা আর কেউ নয়, অদ্বিতীয় ঈশ্বর;
আরো দূরে আসি–
দেখি, মাঠে মাখা শৈশব
কিশোরীর বুকে হুড তুলে রাখা কুচি
উড়ে যাচ্ছে
উড়ে যাচ্ছে…
ফুঁড়ে ঢুকছে বয়স্ক যুবক ও তার নাভিশ্বাস;
পেছনে সারি সারি গাছ
উঠানে শত শত বেজোড় শালিখ,
এ পথে যেতে যেতে দেখেছে কেউ
অসংখ্য রমণীর ধ্বসে-পড়া বুক,
কেউ কেউ দেখেছে–
পৌত্তলিক পুরুষেরা দলে দলে যোগ দিচ্ছে ক্রুসেডে,
তাদের ঝোলার ভেতর ঝুঁকে আছে সেক্সডল।
এই পায়ে-হাঁটা পথে,জানি না, কতদূর এসে গেছি–
হাঁটতে হাঁটতে দেখি…
চলে এসেছে ভবিষ্যৎ!
স্বপ্নাদ্য
১.
প্রবল ঝড়ে নৌকোয় তুমি আমি
বুকের ওপর জোনাকের আশ্রয়,
হাতের মুঠোয় একটিকে রেখেছিলে
আরেকটিতে আঁধার ঝুলছিল;
জোছনায় সবকিছু দুলছিল
দুলছিল নাভির মতো ফুল,
তুমি এসে আমাকেই ঢেকে দিতে
খুলে নিলে নিজস্ব নির্মোক।
২.
শীতেরা চাদর পরে থাকে
খুলে নাও নাভির বহ্নিকোণ;
তাকে তাকে জলপাই এর আঁচার
ক্যাবিনেটে হরিণরঙা মদ,
হাত রাখো এইখানে তুমি স্যাম!
এইখানে বরফ ঢাকা রাত;
আতার মতো একটি নরম ফল
হাতের ভিতর আলতো চাপে রেখে
আঙুলেতে দু ভাগ হয়ে এলে
ভগ্নাংশ অসীমে পুরে নিয়ো।