এক
শুধু অন্ধকার বলেই রাত? চারপাশে আর কিছুই কি দেখার নেই? অন্ধকারেরও তো একটা নিজস্ব আলো আছে। এই যে সারাদিন ধরে পাখিরা গান করে, কোথায় যায় গানেরা? পাহাড় প্রদেশ থেকে দেখা ক্ষীণ আলোর মতো নিজের তালে বয়ে যায় সুতোর মতো জল। এভাবেই তো আকাশ প্রদেশে ওড়াউড়ি করে গানপাখি। অন্ধকারের চৌকাঠ পেরিয়ে উঠোন জুড়ে গানপাখির পথ ধরে আলোরেখার মিছিল। এসবই তো অর্থময় অন্ধকার।
দুই
মনে পড়ে এককোণ থেকে উঠে গেছি আর এক কোণে। কতখানি বদলে যেতে পারে মানুষ? আমি কি বদলাই? আমার মতো করে একই আবহাওয়া দেশ থেকে বার্তা আসে। বেশ কিছু চেনা ছবি অথবা ধারাবাহিক দেখার মধ্যে দিয়ে আস্তে আস্তে সবকিছু চেনা হয়ে যাওয়া ছবি— ভেতর থেকে অনেক কিছু বদলে দেয়। পূর্ণতার আকাঙ্ক্ষাও আমাদের ডাক দেয় ভেতর প্রদেশে।
তিন
আসলে আলো অন্ধকার চোখের কথা। অনেকটা সুতো ছাড়ার পর ডেকেছি। কথা বলতে বলতে অনেকে ঘুমিয়ে পড়েছে। কোনো ডাকেই কারো সাড়া নেই। এমন সময় বুঝি চারপাশে অন্ধকার নামে? কেউ কেউ জেগে থাকলে লোকলজ্জা তাকে কাঁপায়। অথচ কে জানে এমন সময়ে পূর্ণতার আকাঙ্ক্ষা জাগে? হঠাৎ করেই হাওয়া সরে গিয়ে ওঠে ঝড়। কে জানে গভীর প্রদেশের এই আলোড়ন? চোখের অন্ধকার বলে কি সবকিছু আবছা হয় অথবা অন্ধকারের রেখা বলে কি কেউ পড়তে চায় না?
চার
তুমিও মাঝে মাঝে উঁকি দিয়েছ। না, গোপন তথ্যে নয়। তোমার দৃষ্টি তো সোজা বটগাছ ছাড়িয়ে কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। তবুও এ দৃষ্টি মনে হয় চারপাশে কেউ নেই বলে দু’হাত সামনে বাড়ানো। দু’হাত বাড়ানোই বা বলি কি করে। মেঘলা বলে তো সারাদিন নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত হয়ে রইলে। তুমি জানলা খোলো না ঠিকই কিন্তু প্রতিবেশী খুললে তোমার মনে হয়েছে তোমার ছায়া সেখানে পড়েনি তো! তারপর নিজের জায়গা থেকে কিছুটা সরে আসা। এইভাবে প্রতিদিন আদ্যপান্ত অগোছালো হয়ে যাওয়া।