- বছর দেড়েক মেঘলায়ঘেঁষা সুনামগঞ্জের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন শেখ লুৎফর । সীমান্ত পেরুলেই ভারতের মডং-রেঙ্গা-চেলার বাজার। ছুটির দিনে প্রায়ই চলে যেতেন চোঙ্গা বেয়ে। মিশেছেন পাহাড়ি জনপদের মানুষ ও প্রাণ-প্রকৃতির সঙ্গে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছেন বড়গল্প ‘আচিক মান্দি’। পাঁচ পর্বের গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব পড়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। -সম্পাদক
২. লও বন্ডু দোকানখানো যায়
প্রথম সাক্ষাতে মানুষ মানুষকে তিন দিক থেকে বিচার করে। দেহ-ধর্ম ও ধন। একটু কাছাকাছি এলেই নজর চলে যেতে থাকে হৃদয়ের দিকে। মানুষের মগজের সবগুলো স্নায়ুকোষ একটা একটা জোড়া দিলে লম্বায় পৃথিবীর পরিধির সমান হয়। প্রেম বলি, ভালোবাসা কিংবা অহং-ঈর্ষার কথা বলি, মানুষ এক পলকে সব দেখে ফেলতে চায়! কেউ কেউ কিছুটা পারেও। এই প্রজ্ঞার জন্য কলাপাতা-সনদ দরকার নাই। প্রকৃতিই যথেষ্ট। এবং তারা যদি হয় পাহাড়ের সন্তান।
প্রত্যাশার দিকে আমি আর তাকাই না। মনের মাঝে একটা পাহাড়ি ময়না ডাকছে। মাথার উপর বটের ডালে বসে করুণ সুরে গাইছে অচেনা এক নিঃসঙ্গ পাখি। তার সেই মিনতি দৈববাণীর মতো নীল পর্বতের চূড়ায় চূড়ায় ঢঙ্কা পিটছে।
চোখের সামনে অন্তত তিন হাজার ফুট উপর থেকে হুমহুম করে আছড়ে পড়ছে ঝর্ণাগুলো। দুপুরের সোনালি রোদ উপত্যাকার ঘন সবুজে ঝাঁপিয়ে পড়ে হয়ে যাচ্ছে কাঁচা-পাকা কমলা। পর্বতের ভাঁজে ভাঁজে ঘন বাঁশবনের হালকা সবুজ আর তার ফাঁকে ফাঁকে গুল্মজাতীয় লটকি ফুলের ঝোপগুলো লাল-নীল-বেগুণীর মিশেলে রূপের পসরা মেলেছে।
প্রত্যাশা সাংমা, দেখছেন না আমি পাথরে বসে পাথর হয়ে গেছি। আপনি বসেছেন বিশাল বট গাছের শেকড়ে। পাতার আড়ালে ফুটে আছেন অর্কিড ফুল। আমি ঝর্ণার দিকে তাকিয়ে থাকলেও আমার হৃদয়ের সবকটা চোখ আপনাকে পষ্ট দেখছে। যদিও বাঙালদের আগমনের সময় এটা না, তবু আপনি ওদের পথের দিকে বারবার তাকাচ্ছেন। কিন্তু ঘুরেফিরে চোখ দুটো চলে আসছে আমার দিকে।
সৃষ্টির পর হাজার হাজার বছর মানুষের কোনো ভাষা ছিল না। গান, ছবি, যন্ত্রের সুর ছিল না। তবু মানুষ পরস্পর কথা বলেছে, ভালোবেসে জীবনকে নিয়ে গেছে গভীর থেকে গভীরে। এইভাবে আমি আর প্রত্যাশা চোখে চোখ রেখে নিজেদের মাঝে নতুন এক পৃথিবী বিনির্মাণে ব্যস্ত সময় কাটাই।
প্রথম পর্ব পড়ুন ↓
শোন মেয়ে, বরফ যুগের পর পৃথিবী যখন একটু একটু করে ফুলে-ফলে, অরণ্যের সবুজে সেজে উঠতে ছিল তেমনি আমিও পাহাড়ের এই চকচকে আলো দিয়ে, ভেষজের সুবাতাস দিয়ে, ঝর্ণার সুরে সুরে নিজেকে তোমার কাছে পেশ করছি। হৃদয়ের ভাষা হৃদয় বুঝে। তাই আমরা দুই জগতের মানুষ হয়েও খুব কম সময়ের মধ্যে পরস্পরের আপনজন হয়ে উঠতে চাইছি। দ্যাখ মেয়ে, আমার চোখে ভেসে ওঠেছে সাংমা রাণীর প্রতি সরল বিশ্বাস, চিরন্তন প্রেম। আমি এখন তোমার দিকে সিমং রাজার ছেলে লাইলিং এর মতো প্রণয়ভরা চোখে তাকিয়ে আছি। তুমি তো সেই নারী, যাযাবর-বুনো পুরুষকে যে বশ মানিয়েছে, শিখিয়েছে চাষের রীতি, দিয়েছে ঘরের শান্তি আর বিছানার সুখ।
দুপুরটা একটু ছায়াঘন হতেই দলে দলে চোরাকারবারীরা আসতে থাকে। ওরা শাখের করাত, সবদিক থেকেই সীমান্ত-ঘেঁষা পাহাড়িদের জীবনে একটা আপদ। তবু প্রত্যাশা তাদের সাথে হেসে হেসে কথা কয়, ও…ও…আমরা, কীতা মে ভালা আসে?
এছাড়া উপায় নাই। এপাড়ের সবজি-মাছ-শুঁটকি ওপাড়ে না গেলে তারা খাবে কী? আর বাঙালরা পান-সুপারি-কমলা না কিনলে, দশ টাকার জিনিস তাদেরকে বেচতে হবে দুই টাকায়। হয়তো এইজন্যই ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা অনেক কিছু দেখেও দেখে না।
আমার আত্মা উন্মুখ হয়ে তাকে দেখতে থাকে : তার নড়াচড়া, বাতাসে একটু একটু কাঁপতে থাকা সিল্কি চুল, গেঞ্জির কাপড় ফোঁড়ে ডালিম ডালিম স্তন দুটোর উঁকি দেওয়া নাক সবই দেখছে। তার মুখের দুই-একটা বাক্য দিয়ে, বিশেষ বিশেষ শব্দ দিয়ে এই আচিক মান্দিকে আমি গভীর থেকে বুঝতে চেষ্টা করছি।
অথবা বলতে পারি, একটা ঘোরের মধ্যে আছি বলে প্রত্যাশার কিছুই দেখছি না। সামনের ওই ভঙ্গিল পর্বতের দিকে তাকিয়ে আছি। যা অচেনা, অজানা এবং সাধ্যের বাইরে তা পাওয়ার চেষ্টা করাই তো অদম্য মানুষের স্বভাব। এই সহজ সত্যের মতো অবচেতনে আমি পাইকারদের সাথে তার আলাপ শুনি। কোনো একজন চেনা বাঙাল-পাইকার আসতেই প্রত্যাশার গলায় আমোদ ছলকে ওঠে, ও…ও…কীতা মে, ভালা আসে বন্ডু?
হাটবারে আসা এইরকম শখানেক নারী কারবারীসহ আরো ত্রিশ-চল্লিশটা দোকানে বসে আছে সাংমা, আরেং কিংবা মারাক গোত্রের মেয়েরা। বাঙালরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নিচের দিকে ঝুঁকে কথা চালাবে। গোলগলা গেঞ্জির ফাঁকে দেখে নেবে কমলা কমলা বুক। তারপর দেখবে পেট-পিঠসহ যতটুকু সম্ভব। এইসব বিশেষ কর্ম সারা হলে তারা জিব চাটতে চাটতে আসল বাণিজ্যে মন দিবে।
এই ভাষাকে বলে খাসিয়া-বাংলা। খাসিয়া বাংলাতে স্বামীকে বলে ‘বুড়া’ স্ত্রীকে বলে ‘বুড়ি’ এবং বন্ধুকে বলে, ‘বন্ডু’। আর এখন প্রত্যাশা যাকে বন্ডু বললো তার সাথে কারবার আছে। সপ্তাহে দুইদিন লেনদেন হয়। সে দেয় পান-সুপারি। বাঙাল দেয় টাকা। কেউ কেউ পরত পরত পানের আড়ালে খাঁচা ভরে নিয়ে যায় রেডরাম, অফিসার্স চয়েজ, এসি ব্ল্যাক কিংবা দুই-তিন কেজি বাঙ-গাঁজা। এইভাবে ধন-প্রাণ-গতরে সরল পাহাড়ি জটিল ও কঠিন বাঙালের বন্ধু।
বাঙালি মানেই সীমান্ত-ঘেঁষা পাহাড়ির চোখে ভয়-সন্দেহ-আতঙ্ক। রাতে ওরা চোর-ডাকাত-খুনি হয়ে যেতে পারে। কারবারের উছিলা করে দিনে এসে দেখে যায়, কোন কোন বাগানের পান-সুপারি, কমলা চুরি করা যাবে। রাতে চুঙ্গার নিচ দিয়ে দলবলসহ আসবে। শ্বাপদের মতো বুকে হেঁটে উঠে যাবে উঁচু উঁচু সুপারি গাছে। প্রত্যেকটা গাছের গোড়া থেকে পানের বর সুপারি গাছ বেয়ে উপরে উঠেছে। তাই বাঙালরা যতটা নেয় তার চেয়ে বেশি ক্ষতি করে। বাগান মালিক খাসিয়াও বন্দুক হাতে টহলে থাকে। কত যে বাঙাল খাসিয়ার গুলি খেয়ে, সুপারি গাছ থেকে পড়ে ইহদম ফিনিশ করেছে তার কোনো হিসাব নাই। তবু আসে।
প্রত্যাশা, আজ একটু আগে আমি সত্যিকারের পুরুষ হয়ে ওঠেছি। আমার হৃদয়-পতঙ্গ তোমার আগুনে পুড়ে ছাইভষ্ম। আমার বেলায় এইসব তোমার বিবেচনায় রাখা উচিৎ। মানুষ তরুণ থেকে প্রবীণ হয়। তারপর অকেজো বুড়ো। রূপ-যৌবন ও শক্তি সব হারায়। তবু যৌনতা ফুরায় না। তাই কী তোমরা স্বামী নির্বাচনের আগে সরাসরি পৌরুষ্যের পরীক্ষা নাও?
পাহাড়িরা বলে, বাঙালের কোনো ধর্ম নাই। বাঙালরা বাজারে এসে প্রথমেই লাল পানিতে চুমুক দেবে। চার-পাঁচ গ্লাস গিলতেই লুচ্চা আত্মাটা গর্ত থেকে উঠে এসে তাদের চোখে জ্বলে উঠবে। তারপর একটা জয়হিন্দ কিংবা নাছির বিড়ি ধরিয়ে সারা বাজার ঘুরে ঘুরে পসরাওয়ালীদেরকে দেখবে, কথা বলবে। উষা আরেং লাউবা পাহাড় থেকে এসেছে কমলা নিয়ে, প্রত্যাশা এসেছে লংত্রাই পাহাড় থেকে পান নিয়ে, আনার ফল নিয়ে মুশরাম পাহাড় থেকে এসেছে লিরা মারাক। হাটবারে আসা এইরকম শখানেক নারী কারবারীসহ আরো ত্রিশ-চল্লিশটা দোকানে বসে আছে সাংমা, আরেং কিংবা মারাক গোত্রের মেয়েরা। বাঙালরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নিচের দিকে ঝুঁকে কথা চালাবে। গোলগলা গেঞ্জির ফাঁকে দেখে নেবে কমলা কমলা বুক। তারপর দেখবে পেট-পিঠসহ যতটুকু সম্ভব। এইসব বিশেষ কর্ম সারা হলে তারা জিব চাটতে চাটতে আসল বাণিজ্যে মন দিবে।
বাঙালদের নামে অভিযোগের অন্ত নাই। তবু রাত হলে খাসিয়ারা কারবারী বাঙাল বন্ধুকে নিজের ঘরে নিয়ে যেতে ডাকবে, ও…ও… বাঙাল বন্ডু, তর লাগির আমার ঘর আইসে।
রাতে খাবারের সময় বন্ধুকে পাশে নিয়ে খেতে বসবে। ঘুমাবার সময় হলে ঘুমের জায়গা দিবে। শেষ রাতে বাঙাল বন্ধু ভোঙ্গার মাল (চোরাচালানের পণ্য) নিয়ে চুঙ্গা দিয়ে কাঁটাতারের ওপাড়ে চলে যাবে। এই ব্যবসায় সে একটা মোটা লাভ পাবে। খাসিয়া মেয়েদের চৌদ্দ আনাই টাকার জন্য বড় কাতর। তারা প্রিয়জনের চেয়ে প্রয়োজন খুব ভালো বোঝে।
এইভাবে বাঙালরা মেঘালয়ের পাহাড়ি মানুষের হাড়ি-পাতিলের অংশ হয়ে গেছে। যাদের আলাদা রুম আছে তাদের বেলা অন্য কথা কিন্তু বেশির ভাগই এক রুমের মাচাং ঘর। তাই বাতি নিবলে অনেক বাঙাল কুকাম করে ফেলে।
প্রত্যাশা দেবী, আপনি ইচ্ছামতো আমার হৃদয় তালাশ করতে পারেন। আমি জীবন অভিজ্ঞতায় আপনাদের পাহাড়ের মতো প্রাচীন। আমার পাঠশালা প্রকৃতি। তাই ঝর্ণার পানিতে খুব বেশি রোগ-জীবাণু পাবেন না। বছরে সাত-আট মাস আমি ভ্রমণে থাকি। পিঠের ছোট ব্যাগটায় থাকে বই আর একটা লুঙ্গি-গামছা। থাকার জন্য পারত পক্ষে আমি কোনো খরচ করি না। পকেটের টাকা ফুরালে কামলা-কুলি হতে কোনো সমস্যা নাই। মসজিদের বারান্দা, গীর্জার বারান্দাসহ চা-বাগানের কুলির ঘরে কতকত রাত ঘুমিয়েছি।
ছায়া ঘেরা, মায়া ঘেরা পাহাড়ের নিবিড় জঙ্গলে ছেলেটা আপনার কাছে নিজেকে সমর্পণ করবে। আপনি আদিম ক্ষুধা নিবারণের মাধ্যমে তার উপর এসিড ট্যাস্ট চালাবেন। তরুণের মর্দামিতে সন্তুষ্ট হলে গীর্জায় যাবেন হাত ধরে। ঘরে ফিরে আসলে মা-বাবা কিংবা পরিবার যদি জানতে চায়, ওখান মানু ক্যা?
পাহাড়ের কঠিন শিলা, পরিবেশ-পরিস্থিতি আপনাদের দেহ-মনের কলকাঠি নাড়ায়। তাই আপনারা সরল কিন্তু প্রায় নিরাবেগ ও বাস্তববাদী। একবার যদি কোনো তরুণের ওপর চোখ পড়ে যায় আর আপনারা যদি বলেন, তর লাগির আমার মন খাইছে। তাহলে সব হয়ে যাবে। অহেতুক উরু দেখিয়ে আপনারা তরুণ প্রেমিকের জান খারাপ করেন না। সবকিছু ঠিকঠাক মিলে গেলে সোজাসুজি প্রস্তাব করেন, ‘লও বন্ডু জঙ্গলখানো যায়, জঙ্গল ফকফক’।
প্রত্যাশা দেবী, আমি আরো জানি, আমার জন্য আপনার ‘মন খাইছে’ বললেও মনটা আমাকে কতদিন খাবে তার কোনো ওয়ারেন্টি-গ্যারান্টি নাই। আপনি পরিবারের কর্তা। আপনার হুকুমে বুড়াসহ পবিারের সবাই চলতে বাধ্য। ভালো না লাগলে খোঁপা থেকে ফেলে দিবেন বাসি টগর ফুল। আচিক মানুষ বলেই এইসত্য আপনাদের সমাজে চিরন্তন। এবং কিছুদিনের মধ্যেই আরেকজনের উপর আপনার মন খাবে। তখন সেই তরুণকে বলবেন, জঙ্গল ফকফক। জঙ্গল যা।
ছায়া ঘেরা, মায়া ঘেরা পাহাড়ের নিবিড় জঙ্গলে ছেলেটা আপনার কাছে নিজেকে সমর্পণ করবে। আপনি আদিম ক্ষুধা নিবারণের মাধ্যমে তার উপর এসিড ট্যাস্ট চালাবেন। তরুণের মর্দামিতে সন্তুষ্ট হলে গীর্জায় যাবেন হাত ধরে। ঘরে ফিরে আসলে মা-বাবা কিংবা পরিবার যদি জানতে চায়, ওখান মানু ক্যা?
আপনি খুব স্বাভাবিক গলায় বলবেন, ওখান আমার বুড়া (স্বামী) আসে।
শোন আচিং রাজার মেয়ে, সেই গুহা যুগের ঘামের গন্ধ আমার দেহে। আমরা পাখির মতো স্বাধীন ছিলাম। আমাদের কোনো ভাষা ছিল না। কথা বলতাম ইশারায়। কামনায় কাতর হলে পশুর মতো ও…ও…করে তোমাকে প্রেম নিবেদন করতাম। হিংস্র পশুর সাথে লড়াই করে আহত আমি ফিরে এলে তুমিও ও… ও…করে করুণ সুরে সমবেদনা জানাতে। এইভাবে তোমার সুরেলা কণ্ঠ থেকে একদিন সৃষ্টি হলো গান।
বাজারটা জমে উঠেছে। টঙে টঙে পাহাড়িদের সাথে বসে বাঙালরা পান করছে। চোখ একটু একটু লাল। কুটিল মন নিয়ে ওপাড় থেকে বাণিজ্য করতে এসেছে জংলী ফুলের দেশে। পাহাড়ে রাত একটু গভীর হলে মাদক আর গরুর চালান যাবে চুঙ্গার নিচ দিয়ে। যতই রফা করে আসুক তবু মাঝে মাঝে বিএসএফ সীমান্তে তাদের তৎপরতা দেখাবার জন্য গুলি চালায়। দুই-একজন আহত হয়। কেউ কেউ পাছা উল্টে কুকুরের মতো পড়ে থাকে নোম্যান্স ল্যান্ডে।
বিকালের লাল আলো পাহাড়ে জাফরানি রং ছড়ালে প্রত্যাশা উঠে দাঁড়ায়। বটতলার আবছায়ায় তার চিকন দেহ মোমবাতির শিখার মতো ঝলক দিয়ে ওঠে। চিরল চিরল চোখ মেলে আমাকে একবার দেখে, উৎসাহে নয়ন-মণি দুটো চকচক করে জ্বলছে। বিকিসিকি শেষ। টাকা-পয়সা বোঝে নিয়েছে বাঙাল কারবারীদের কাছ থেকে। তারপর আমার দিকে একটু হেসে কোকিলার মতো গেয়ে ওঠে, ও…ও…বাঙাল বন্ডু, তুই বসে আসে? লও বন্ডু দোকানখানো যায়।