আগুনের গল্প
সে এক রহস্যদ্বীপ আকাশের বুক চিরে নামা, আরেক
……উদ্ধত আকাশের লৌকিক আবির
পথ তার সরল সড়ক, দীঘল অহঙ্কারে—রঙিন
আগুনে পুড়িয়ে আয়ু, সজীব ফড়িঙের ঘরে জমা রাখে স্বপন
কাছে যাওয়ার গান গেয়ে ডুবে যায়
অতলে রচনা করে বিরহের দীর্ঘ পাতালকাব্য
আমাদের উজানভাটি ভাবনায়, সে এক
অনন্ত স্রোত, অলৌকিক গৌরবের মিনার
বাগানে ঝুলিয়ে আরক্ত গোলাপ
দুপুরে বর্ষণ করে সান্ধ্য আঁধার
পুরানের রিদমে হাজার বছরের বহতা নদী গান গায়
ক্ষতচিহ্ন রেখে যায় শীর্ণ বুকে,
লক্ষ ফড়িঙয়ের উড়ন্ত হাহাকার নিয়ে
নারী ও নদী গান গেয়ে গেয়ে কোথায় হারায়?
মনমগজে রাধার বসবাস
পৌরাণিক টিনের চালে বাজে অঝোর ডমরু
ঘুমবালিশ—নীলাঞ্জনা মেঘ ভিজিয়ে দেয়
মনমগজের বাড়িতে রাধা অভিশারে মাতেন
শীষ কাটেন, গান করেন গোপন ইশারায়
জীবন্ত এমন সতত দৃশ্য দেখে উঙ্গান কালিদাস
ঘোর ক্লান্তিতে তার অক্লানি আসে, ঘুম আসেনা স্নানঘরে
বেঘোর ফড়িঙ, ডানায় গান ফেরি করে ক্লান্ত ভীষণ
খ-িত আয়ু তার—ছটফটানি বাড়ছেই কেবল
তালনিরাই সন্ধ্যায় নামে প্রাচীন বরষন, কে যেন ডাকে
দাড়াও হে সখা, বাড়াও হাত—মেঘের গীটারে
তুমুল আঙুল চালাও, বাজাও অনন্ত জীবনের গান
পৈঠার আসন
ফড়িঙের আয়ু নিয়ে ছুটছো কোথায়?
দাড়াও, বাড়াও হাত-
মেঘের আঙুলে বাজাও
সবুজ পৃথিবীর গান
সব্জি ক্ষেতের সুর পাঠ করো
ধারণ করো ধানদানার গরিবী দর্শন
কেতাবি কথা ছুড়ে ফেলে
মাটিরঘরের পৈঠায় আসন পাতো
সুর করে গাও—সবই দেখি তানানানা…
চোখ
ধ্যানী ঋষি উড়ে গেলো অনন্ত লোকে
মায়াবী ধোয়া থেকে তোমার জ্যেতির্ময় আবির্ভাব
হাওয়ায় মাদকতা ছড়িয়ে—
সবুজ প্রকৃতি আর মগ্নচৈতন্যে
শব্দহীন গানে গানে, কানে কানে—
পাঠ করে গেল তোমার জপনাম
পাহাড়ি স্বচ্ছজলে ডুবসাঁতার খেলছে সন্তুর ছায়া
নদীনিসর্গে রচিত হলো নোনা বালি কাব্য
নিকটের মরিচিকা তীর, দূরে সরে যাচ্ছে
বারবার মৃত্যুর প্রলোভনে পড়ে, মানুষ—
ভুলে যাচ্ছে জন্মের ছলা ও কলা
এক ইঞ্চি আয়ত শাদাকালো জমিন
লুকিয়ে আছে তাতে জগতের কাব্য ও মায়া
রহস্য ছায়া আর প্রলয়ের বিলম্বিত চরাচর
এমন বিচিত্র বিনাশি তুমি, ঈভ—
আগুনে রূপে দগ্ধ করো ফড়িঙ, বলো আদম—
কিভাবে বুঝবে তোমার শিল্প ভাষা
শান্তিবন পাহাড়ে যাযাবর মেঘ
ও মেঘ যাযাবর মেঘ কার নাম নিয়ে ওড়ো
বেদনার ভারচিত্র আঁকো তোমার দীঘল ক্যনভাস
ও মন ভোলা পাখি, কার গান কণ্ঠে বাজাও
ফেরারি জীবনে খুঁজো কার ঠিকানা
আবার এসো, কৈশরের উড়ন্ত ইশকুলে—
ঝুলন্ত ব্ল্যকবোর্ডে লিখে দিয়েছিল যে বালিকা
হৃদয়ের গোপন কুঠুরিতে কার জন্য তুলে রেখেছে সুর
বাইফাতরা কিশোর কখনো বুঝেইনি প্রেমের অনন্ত সারগাম
কোথাও নেই সে—তবু তার কালো খোপাঁয়
শহরের ঝিরঝিরে বাউরি হাওয়া গান গায়
নিদেখা মেঘ হয়ে ওড়ে আমাদের যৌথ হাহাকার
স্বাক্ষী শান্তিবন কান্তার আর দীর্ঘ ফুলচৌকি পাহাড়
নিশুন্য পলাতক পকেট, বাজাও— প্রকৃতির শব্দহীন গান
ছুটো নিরুদ্দেশ, সঙ্গী করো দীর্ঘ এক ক্লান্ত প্রাণ—