প্রেমের পয়গাম
কিছুতে বিশ্বাস নেই, রাই অনুপমা—
বলতে পারো অবিশ্বাসী। বিবাহ প্রথায়,
প্রথাকে বিশ্বাস করে— যারা বিছানায়
রমণীকে শুতে নিয়ে যায়; দাঁড়িকমা—
ছাড়া পাঠ করে দেহ, যারা ভাবতে চায়
শরীর কেবল এক বৃক্ষের উপমা—
কোথাও হৃদয় নেই মাংসের খাঁচায়,
ওদের বিশ্বাসে চাই— চিরকাল ক্ষমা।
বিবাহে বিশ্বাস নেই আমার, তোমার—
নেই প্রেমে; চিরন্তন এ অসমতার
সমতায় মতি এলে— ডেকো, এই নাম।
অবিশ্বাস বিশ্বাসের মিলিত দোহার—
যেদিন বাজাবে সেই অভিন্ন সেতার,
দুয়ারে দাঁড়াবো নিয়ে— প্রেমের পয়গাম।
নোরিন জাহান অমি
নোরিন জাহান অমি—
রিজিকে তোমাকে চাই
নহলী শরাব সাকি,
জান্নাতি হুর ছাই।
হাশর বাসর তুমি—
নগদ নেকির খাতা;
অমি’র সোহাগে লিখো—
মিথের মুনাই পাতা।
চিঠিকাব্য
নোরিন জাহান অমি, গৃহিণী-সলাজ
(তোমার) কবিতা-প্রিয় ঠোঁটের ছোঁয়ায়—
উচ্চারণ মাত্র সবই— কথা হয়ে যায়,
আমি ভুলে যাই যতো গদ্য-কারুকাজ;
অলসতার চে’ তুমি প্রিয় হয়ে ওঠো,
নিঃসঙ্গতার অধিক ঘনিষ্ঠ, আপন—
অবসর বিনোদন হয়ে পড়ে ছোট,
সংগীতময় করে তোলো সমস্ত যাপন।
‘কবিতা: নোরিন অমি, আমি কবি তাঁর—’
যেদিন দিয়েছো এই মৌখিক স্বীকৃতি,
হাতের বন্ধ্যাত্ম কিংবা লেখার বিরতি—
ভেঙে ইচ্ছে হয় লিখি কবিতা হাজার;
শিরোনামে এঁকে প্রেম, রাগ অনুরাগ—
‘প্রিয়তমা অমি, ইতি তোমার সোহাগ।’
উৎসর্গ
সমস্ত প্রশংসা এক আল্লাহ্’র দাবি—
সৃষ্টি করেছেন যিনি— ‘নোরিন জাহান’
প্রেমিক হৃদয়ে তাই পাঠ করি, “ফাবি—
আইয়্যি আলা-ই রাব্বিকুমা তুকাযযিবান।”
তোমাকে পেয়েও আমি কী করে খোদার—
অকৃতজ্ঞ হই? সে কি কখনো ছিলেম?
কবুল সংসারে ধর্ম ফুঁকে যদি— তাঁর
শরীয়ায়— ইবাদত করেছেন প্রেম।
যা কিছু নিষিদ্ধ পানে— আহার, আরাম,
অভিযোগ নেই— কেন গন্দম অধরা!
খোদার শোকর করি— মদিরা হারাম,
হালাল তোমার ঠোঁটে— চুমুর ফোয়ারা;
আখেরেও ‘অমি’ চাই, যেন মৃত্যু’ পর—
জান্নাতময় হয়ে উঠে মাটির কবর।
কবিতাকাহন
অন্ত্যমিল ছন্দ নয়: কবিতা কবির—
ভাবনার অনুবাদ, আত্মার দর্পণ।
উচ্চারণই কবিতা; হ্যাঁ, প্রতি উচ্চারণ—
হোক সে মুনাই কিংবা সোহাগি অমি’র।
কবিতা হলো কবির যাপিত জীবন,
সংসার বিরহ প্রেম সুখ দুঃখবোধ—
সমর্থন প্রতিবাদ দ্রোহ ঘৃণা ক্রোধ—
নীরবতা ভেঙে ভেঙে খণ্ড চিত্রায়ন।
শব্দের তুলিতে এঁকে জীবনের ছবি—
একদিন বিদায় বলে গানের স্বরাজে,
অমর তাবিজ পুঁতে কবিতার মাঝে—
নিজের কবর খুঁড়ে শুয়ে পড়ে কবি।
‘কবির জীবন আয়ু কবিতা-সমান’
মৃত্যুর পরেও তাই— কবিরা জন্মান।