অতর্কিত প্রবন্ধ-৬
প্রখর রইদের তাপে
আমাদের মগজ রান্না হচ্ছে। কিছুক্ষণ পর
সালুন হবে।
আপনারা এসে কষ্ট করেছেন! বসুন,
দয়া করে।
মগজের সাথে ঘামের মতো ফুটন্ত-সুরুয়া জ্বাল হচ্ছে: একটু ধৈর্য ধরুন!
আমাদের শরীরের তাবৎ নুন-জল তো আপনাদেরই।
এই দিনটি অনেকদিনের কাঙ্খিত।
আমরা আরেকটু সিদ্ধ হলেই- পেশ করা হবে প্রত্যেকের
প্লেটে। অতএব-
যতক্ষণ আছে তসবীহ গুনতে থাকুন, একমনে।
আর রক্তের দুই পদ:
প্রারম্ভে (পাচ্ছেন) রেড ওয়াইন; আখেরে ফ্রিজজাত দই।
সান-সংশয়
বুক-উচু ঘাস নিয়ে বেড়ে উঠছি, অনন্ত সন্ধ্যারাত্রি
জীবন যেখানে সান্ধ্য-তারার সিন। রাগ-তাড়িত।
চা, চুম্বনের চুমুক এখানে পরস্পরে সমার্থক;
হলুদ বর্ণ, সামুদ্রিক খেলো-হাসি আছে।
আরণ্যক অনিদ্রা, কুয়াশা-দ্রবণ, ছায়ামগ্ন পাইনপ্রজন্ম, শন-
সংসার-
আমাদের দৈনন্দিন হাওয়াগন্ধস্নান তুলনীয়।
রোদ-ঝলকিত সুর ছেয়ে আছে পার্বতিক সীমা-নিঃসীমায়….
আয়েশী অসুখগুলো বৃক্ষবৎ ‘দূর্দিনের ছায়া’ হয়ে ভাসে।
আশ্রমের নামে দূরতর (আধখোলা) জানলাগুলো পাল্লা দেয়
সুর-নামতার জপে –
আর,
আলমিরার নির্জনতা খুন হয় পারস্পরিক মৃত্যুতে।
তোমার চলে যাওয়া নিয়ে
তোমার চলে যাওয়া নিয়ে কুয়াশা-ফেরত আমি ‘গাইগুই’
গেয়েছি কতক্ষণ।
তারহীন সেতারে মৃদঙ্গ তুলেছি। ‘নাচলিপি’ বাতাস এঁকেছে।
শান্ত, নিরব জল
সর্পময় একে-বেকে গেছে এক অনন্ত বিবরের দিকে। ছায়াতরু
সঘন অন্ধকার দিছে। দিছে অন্তহীন
ঝিঁঝিঁর জিকির। পথগুলো, হাওয়াগুলো ধুলোময় যাওয়াটুকু,
চিহ্নটুকু দিছে।
অতঃপর মেঘে ঢেকে গেছে। হারিয়েছে ছন্দ, লিপি, গানের প্রকার
তোমার চলে যাওয়া নিয়ে কুয়াশা-ফেরত আমি ‘গাইগুই’
গেয়েছি কতক্ষণ৷
তোমার লোকান্তরিত ছায়া আকাশের নীলিমা-সদৃশ আশ্রয়। অশরীরী অন্ধনীল তনু।
সব গেছে, রয়ে গেছে- ঋষবসর্বস্ব হয়ে অলৌকিক লৌকিকতাটুকু…
অন্ধকারে এক অক্ষর
এখানে সময়হীন আছি। সাক্ষরতা, নির্জনতা-লীন। দাঁড়িয়েছি
স্ট্যাচুময়;
বানভাসি,
একা…
দূর-দূরান্তের ফড়িঙগুলো উজ্জ্বলতাহীন।
বেমানান পরিচ্ছদে। স্বগন্ধে-
নির্বিরোধ
বাক্য-বিনিময় চলে রাত্রি-দিন।
বিচ্ছিন্ন, অনুকারিক আলো খেলা করে নিজস্ব নিয়মে
অনুচ্চারিত হাওয়ার হুল্লোড়- পল্লবতাড়িত হয়ে
ঝরে
পড়ে
সুর-তাল-লয়হীন অসবুজ ঘাসে
নিরানন্দ, অসহ সমাজে…