আছড়ে পড়া ঢেউয়ের পারদ ও মাটির ঘ্রাণ
বাতাস খুলেছে দুয়ার।
যে কোনো দিক থেকে স্পর্ধিত পা রেখে
তুমি এগিয়ে এসো
দেখো, পালে কখনও হাওয়া লাগে না, লাগিয়ে দিতে হয়
লাগালেই ফেঁপে ওঠা গতিময় জীবন
ঢেউয়ের পারদ ভেঙ্গে উছলে ওঠা—বহুদূর
এ এক অন্য নির্গমন।
তামাশার পাত্তিলু খুলে এগিয়ে এসো
চুড়েলদের জীবন বড়ই নিম্নগামী
চোখের পর্দা সরালে কঙ্কাল-স্তুপ ভেসে ওঠে—
শিতলক্ষার জল ভারী করে
মোহেষগুলোর গুতোয় নগর কাতরাচ্ছে
কাল্ডদের পৈতা ছিড়ে গেলে
তোমার পদভারে সিক্ত হওয়া মাটির ঘ্রাণ
টেনে নেবে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের পরত
একচিমটি লবন দেয়া লোকের অভাব হবে না, হবে না কোনোকালে
বাতাসে ভাসে নতুন ফর্মালিন ক্যারেট ক্যারেট গোল্ড
জুয়াড়ীরা ক্যাসিনোর সঙ্গে রাষ্ট্র মাখিয়ে গিলে খায়
অন্ধ বলে আমি এসব দেখি না
আমাকে কতোবার করাতগুড়ায় মাখিয়েছে
রাষ্ট্রের সিঁদেল চোর
নাম দিয়েছে, তোমার সিয়াসত ভিন্ন বলে—
আমরা অন্য গ্রহে বাস করি।
কৈইলজাচিপা সুর
এ কোন চন্দ্রমুখী ঠোঁটভরা জলের বচন
জলগান গেয়েছিলো মনোহর, পিতার সঙ্গীত—
‘হাসিতে খেলিতে সবে
নামিলা যমুনার জলে …’
সেই গান গেয়ে বেড়ায় ত্রিকাল মানুষ।
এই জল নিয়ে আজও এতো বাটওয়ারী
এই প্রবাহে এতো ঘা দেখে চকিত ভূমি।
সব ভুলে আমাকে গাইতে দাও—
‘পড়িলো শিঙ্গার সাড়া
জাগিলো গোয়ালপাড়া
ধেনু লইয়া চলে রামকানাই …’
নিশিভোর মানুষের কৈলজাচিপা সুর আজও
বাতাসে ভেসে বেড়ায়, ভেসে বেড়ায় মাগুরার তীরে।
সমুদ্র মন্থন করা জলগান, জলের সবক
কে আজ দেবে বলো মিনতির দুয়ার খুলে?
এ কেমন প্রত্যাবর্তন
জন্ম থেকে পায়ে পায়ে লেগে আছে
প্রথমে প্রবল ভয়ের ঘণ্টি বাজিয়ে
মধ্যসময় পার করে এখন কৌতুহল,
বিস্ময়ে অপেক্ষায় আছি, কী এমন
অপেক্ষায় আছে – আমার অজানা
ওপারের জীবন। এ তো পূর্ব থেকে—
নির্ধারিত নিয়তির পাঠ্যক্রম, কী ছিলো
জানি না, জানার চেষ্টাও করিনি ভয়ে।
এখন খানিকটা নির্ভাবনায় প্রত্যহ
— এবাদত শেষে
তসবিদানার মতো হিসাব হয় না আমার
সিদ্ধান্তমূলক এমন প্রত্যাবর্তন সহজ নয়
কিংবা দুনিয়াদারীর বেদনার ভেতর আজও
প্রবল টান অনুভূত… তবে কেন ফিরে যাবো
যেতে হবে জেনেও এ জীবন বড় ভালোবাসি।